রংপুরের বাজারে আসছে হাঁড়িভাঙ্গা, কেনাবেচার জন্য চালু হচ্ছে অ্যাপস

স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় সুস্বাদু হাঁড়িভাঙ্গা আম গাছ থেকে পাড়া শুরু হবে আর ক’দিন বাদেই। এর পরই শুরু হবে হাঁড়িভাঙ্গার বাজারজাত। এ বছর প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর বাগানে হাঁড়িভাঙ্গার ফলন হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলে ১০০ কোটি টাকার ওপরে হাঁড়িভাঙ্গা আমের বেচাবিক্রি হবে বলে জানিয়েছে চাষি ও ব্যবসায়ীরা।

আজ সোমবার , ৭ জুন বিকেলে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার খোঁড়াগাছ ইউনিয়নের পদাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় জানানো হয়, আগামী ২০ জুন থেকে বাজারে পাওয়া যাবে রংপুরের বিখ্যাত এই আম।

আম পরিবহনের জন্য বিশেষ বাস সার্ভিস চালুর দাবি জানিয়ে সভায় চাষিরা বলেন, ন্যায্য দাম নিশ্চিতকরণে প্রশাসনকে উদ্যোগ নিতে হবে। পদাগঞ্জহাটের রাস্তাঘাটের সংস্কার এবং হাটে ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করাসহ পাবলিক টয়লেট স্থাপন ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে।

ব্যবসায়ী ও চাষিরা বলেন, শুধু তাই নয়, আমের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত, পরিবহন সুবিধা বাড়াতে আম পরিবহনের জন্য বিশেষ বাস ও ট্রেন সার্ভিস চালুর দাবি তোলা হয়। হাঁড়িভাঙ্গার বিশাল আমের বাজার তৈরি হলেও পদাগঞ্জে এবং রংপুর শহরে কোনো ধরনের আম বিক্রির শেড নেই।

তারা আরও বলেন, সে কারণে কাদামাটি মারিয়ে হাঁড়িভাঙ্গা বিক্রি করেন ব্যবসায়ী ও চাষিরা। হাঁড়িভাঙ্গার বাজার সম্প্রসারণ ও চাষাবাদ বাড়ানোর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান তারা।

মিঠাপুকুর ইউএনও মান্নান ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন রংপুরের জেলা প্রশাসক হাসিব আহসান। বক্তব্য রাখেন মিঠাপুকুর উপজেলা চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সরকার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের রংপুর উপপরিচালক ওবায়দুর রহমান মণ্ডল, কৃষি বিপণন অধিদফতরের উপপরিচালক আনোয়ারুল হক প্রমুখ।

জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন, এবার রংপুর মহানগরীর লালবাগ এলাকায় আগামী ২০ জুন সরাসরি কৃষকের আম বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওইদিনই সদয় অ্যাপস নামে একটি হাঁড়িভাঙ্গা আম বিক্রি অ্যাপস চালু করার কথা জানান তিনি।

রংপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানিয়েছে, এবার মিঠাপুকুর উপজেলার আখিরাহাট, পদাগঞ্জ, মাঠেরহাট, বদরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুরসহ কিছু এলাকাতে প্রায় ৩ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে সব জাতের আমের আবাদ হয়েছে।

এর মধ্যে আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে রয়েছে হাঁড়িভাঙ্গা আম। জেলায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৩ হাজার ৮৩৫ মেট্রিক টন। এর মধ্যে হাঁড়িভাঙ্গা আমের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৭ হাজার ৯২৫ টন আম।

জেলার মধ্যে বদরগঞ্জে সবচেয়ে বেশি ৪০০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। এছাড়াও রংপুর মহানগর এলাকায় ২৫ হেক্টর, সদর উপজেলায় ৬০ হেক্টর, কাউনিয়ায় ১০ হেক্টর, গঙ্গাচড়ায় ৩৫ হেক্টর, মিঠাপুকুরে ১ হাজার ২৫০ হেক্টর, পীরগঞ্জে ৫০ হেক্টর, পীরগাছায় ৫ হেক্টর ও তারাগঞ্জ উপজেলায় ১৫ হেক্টর জমিতে আমবাগান রয়েছে।

এবি/রাতদিন

মতামত দিন