রংপুরে নিজ হাতে লাগানো গাছের নীচেই প্রস্তুত এরশাদের ‘কবর’

ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের রংপুর নগরীর দর্শনা মোড়ের পাশে  পল্লী নিবাসে এরশাদের মরদেহ দাফন করতে কবর খোঁড়ার কাজ শেষ হয়েছে।

আজ সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে কবর খোঁড়া শেষ হয়। পরে তা পরিদর্শন করেন রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি ও সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। খনন করা কবরটি জাপা নেতাকর্মীরা পাহাড়া দিচ্ছেন।

রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাফিউল ইসলাম শাফী জানান, ‘পল্লী নিবাস ক্যাম্পাসের লিচু বাগানটি স্যারের আগ্রহে তৈরি হয়েছে। তিনি নিজেই সেখানে গাছ  লাগিয়েছেন। রংপুর আসলেই ভোরে তিনি গাছে পানি দিতেন। পরিচর্যা করতেন। সেখানেই তিনি সমাহিত হবেন। ‘

শুরু থেকে জাতীয় পার্টির(জাপা) চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কবর যেন রংপুরে হয় সেই দাবি উঠেছিল। জাপা চেয়ারম্যান সিএমএইচএ চিকিৎসাধীন থাকালীনও তিনি মারা গেলে তার কবর ‘পল্লী নিবাসে’ করার দাবি জানিয়ে রংপুরে সংবাদ সম্মেলন করে দাবি জানিয়েছিল জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা।

সর্বশেষ আজ সোমবার, ১৫ জুলাই দুপুরের দিকে সংবাদ সম্মেলনেও একই দাবি জানানো হয়। আর বিকালে প্রয়াত এরশাদের দাফন রংপুরে করার জন্য তাঁর পল্লী নিবাসের বাড়ির লিচু বাগানে কবর খোঁড়ার কাজ শুরু করে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা।

বিকেলে রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি ও সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা কবর খোঁড়ার কাজ শুরু করেন।

এ সময় সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, আমাদের প্রিয় নেতার মরদেহ গ্রহণে আমরা প্রস্তুত। আমাদের সঙ্গে রাজশাহী বিভাগীয় জাতীয় পার্টির নেতারা রয়েছেন। তারাও রংপুরে এরশাদের মরদেহ দাফনে একমত। যেকোনো মূল্যে এরশাদের মরদেহ রংপুরে দাফন করা হবে। এজন্য প্রধানমন্ত্রীসহ জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা ও পরিবারের সদস্যদের সার্বিক সযোগিতা কামনা করছি আমরা।

ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের পাশে নগরীর দর্শনা মোড়ে অবস্থিত এরশাদের বাড়ি পল্লী নিবাসে নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে বিকেলে কবর খোঁড়া শুরু করেন সিটি মেয়র। এসময় মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির সহ জেলা ও মহানগরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

নেতৃবৃন্দ জানান, মঙ্গলবার জানাজা শেষে এখানেই সমাহিত করা হবে তাদের নেতা এরশাদকে। তাঁরা বলছেন, তাদের প্রিয় নেতা ও রংপুরের সন্তান রংপুরের মাটিতেই শুয়ে থাকবেন।

যদিও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রিয় কমিটির পূর্ব ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মঙ্গলবার বাদ জোহর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে চুতুর্থ জানাজা শেষে রাজধানীর বনানীর সামরিক কবরস্থানে এরশাদের মরদেহ দাফন করার কথা।

 এদিকে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের চতুর্থ দফা জানাযার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠ। সেখানে প্যান্ডেল তৈরির পাশাপাশি লাগানো হয়েছে অনেকগুলো মাইক।

মঙ্গলবার সকাল ১০টার পর এরশাদের মরদেহবাহী হেলিকপ্টার রংপুর সেনানিবাসে অবতরণ করার কথা রয়েছে। জানাজা শেষে ও্ই হেলিকপ্টারেই মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে ঢাকায়।

এবি/রাতদিন