রংপুরে প্রসূতি রোগীর অপারেশন শেষে ভেতরে সুই-সুতা রেখেই সেলাই করে দিয়েছেন চিকিৎসক। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটেছে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। গত দুই দিন হাসপাতালে যন্ত্রণায় ছটফট করছেন ওই প্রসূতি।
ভুক্তোভোগী প্রসূতির খালাশাশুড়ি রনজিনা আক্তার জানান, প্রায় দেড় বছর আগে রংপুর সদর উপজেলার পাগলাপীর এলাকার ইদ্রিস আলীল ছেলে তানজিদ হোসেনের সঙ্গে একই উপজেলার পানবাজার এলাকার আমিনুর রহমানের মেয়ে আফরোজা বেগমের (১৯) বিয়ে হয়। তানজিদ পেশায় অটোরিকশা চালক।
গত মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট আফরোজার প্রসব ব্যথা উঠলে বিকেল ৩টার দিকে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেখানে ওয়ার্ডে প্রথমে নরমাল ডেলিভারী করানোর চেষ্টা করে চিকিৎসকরা। বাচ্চার আকার তুলনামূলক বড় হওয়ায় অপারেশন থিয়েটারে প্রসবের রাস্তার কিছু অংশ কেটে বাচ্চাটি প্রসব করানো হয়। এরপর রক্তক্ষরণ হতে থাকলে দুই ঘন্টা পর অপারেশন থিয়েটারে রোগীর শরীর অবশ না করেই সেলাই করা হয়। এ সময় সূচ সুতা ভিতরে রেখেই সেলাই করে দেয়া হয়।
এদিকে অপারেশনের পর থেকেই অসহ্য ব্যথায় ছটফট করতে থাকেন আফরোজা। শুরু হয় রক্তক্ষরণ। একপর্যায়ে বিষয়টি চিকিৎসককে জানালে তিনি বৃহস্পতিবার সকালে এক্সরে করার পরামর্শ দেন। চিকিৎসকের পরামর্শে মেডিকেলের বাইরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে গিয়ে এক্সরে করালে আফরোজার গোপনাঙ্গের ভেতর সুই-সুতা পাওয়া যায়।
আফরোজার নানি শাশুড়ি রেজিয়া বেগম অভিযোগ করে বলেন, অপরারেশন থিয়েটারে কোনো চিকিৎসক তার অপারেশন করেননি। নার্স দিয়ে অপারেশন করা হয়েছে। এ সময় আফরোজা ব্যথায় ছটফট করতে থাকলে তাকে চড়-থাপ্পড়ও মারেন কর্তব্যরত নার্সরা।
ভুক্তভোগী আফরোজা বলেন, ব্যথায় ছটফট করলেও কর্তব্যরত নার্স ও চিকিৎসকরা তার কথা শোনেননি। উল্টো অপারেশন থিয়েটারেই তাকে চড়-থাপ্পড় মারেন কর্তব্যরত নার্সরা।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শারমিন সুলতানা লাকী বলেন, ভুলক্রমে এটা হয়েছে। রোগীর সুচিকিৎসায় পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. সুলতান আহমেদের কক্ষে গেলে তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন বলে জানান অফিস সহায়ক।
জেএম/রাতদিন