‘গাঙচিল’ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী, প্রথম ফ্লাইট যাচ্ছে আবুধাবি

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বহরে যোগ হওয়া অত্যাধুনিক বিমান তৃতীয় ড্রিমলাইনার গাঙচিলের উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার গাঙচিল যেন ভালোভাবে ডানা মেলে উড়তে পারে, সেই যত্ন সবাই নেবেন।

বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিভিআইপি টার্মিনাল থেকে গাঙচিলের বাণিজ্যিক যাত্রার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিমানটির নামকরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নিজেই।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের নতুন বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটি বাণিজ্যিক যাত্রায় প্রথম ফ্লাইট নিয়ে রওনা করবে বিকালে। সাড়ে ৫টায় উদ্বোধনী ফ্লাইটে আবুধাবির উদ্দেশে আকাশে ডানা মেলবে ‘গাঙচিল’।

বোয়িং ৭৮৭-৮ এর উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিমান আমাদের নিজস্ব সম্পদ, তাই এর সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণ আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। বিমানের যাত্রীসেবার মান অধিকতর উন্নত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি প্রতিটি ফ্লাইট সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান।

সারা বিশ্বে বিমানের ফ্লাইট যেন যেতে পারে, সেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ড্রিমলাইনারের সরাসরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জেএফকে বিমানবন্দরে যাওয়ার সক্ষমতা রয়েছে। এ রুটে বিমান চালুর চেষ্টা চলছে। শুধু তাই নয়, পর্যায়ক্রমে বিশ্বের বিভিন্ন রুটে বিমানের ফ্লাইট যেন যেতে পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। লন্ডনে স্লট বৃদ্ধি করার চেষ্টা চলছে।

পণ্য রফতানির জন্য কার্গো বিমান কেনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পণ্য রফতানির জন্য দুটি কার্গো বিমান কেনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন দেশে কার্গো বিমানের দাম যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।

ধার করে আর বিমান কেনা হবে না এমন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ঋণগ্রহণ করে উড়োজাহাজ কেনা হলেও এখন থেকে দেশের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নিজস্ব অর্থ ঋণের মাধ্যমে বিমান কেনা হবে।

উল্লেখ্য, বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির উড়োজাহাজ ড্রিমলাইনার টানা ১৬ ঘণ্টা আকাশে উড়তে পারে। অন্য উড়োজাহাজের চেয়ে এর জ্বালানি খরচও ২০ শতাংশ কম।

ড্রিমলাইনার গাঙচিলের ২৭১ আসনের মধ্যে ২৪টি বিজনেস ক্লাস এবং ২৪৭টি ইকোনমি ক্লাসের আসন। বিজনেস ক্লাসের আসনগুলো ১৮০ ডিগ্রি পর্যন্ত রিক্লাইন্ড এবং সম্পূর্ণ ফ্ল্যাটবেড সুবিধা রয়েছে।

গাঙচিল সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪৩ হাজার ফুট ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময়ও ওয়াইফাই সুবিধা দেবে যাত্রীদের। যাত্রীরা ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে পারবেন এবং বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে অবস্থিত বন্ধুবান্ধব ও পরিবার-পরিজনের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন।

গত ২৫ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল থেকে আনা হয় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ‘গাঙচিল’। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পছন্দে এর নামকরণ করা হয়েছে ‘গাঙচিল’।

‘গাঙচিল’ যুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজের সংখ্যা দাঁড়াল তিনটিতে।

২০০৮ সালে মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং কোম্পানির সঙ্গে ১০টি নতুন উড়োজাহাজ কেনার জন্য ২১০ কোটি মার্কিন ডলারের চুক্তি করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। এর আগে এগুলোর মধ্যে চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর, দুটি নতুন বোয়িং ৭৩৭-৮০০ যুক্ত হয়েছে। বাকি চারটি ড্রিমলাইনারের ২০১৮ সালে বাংলাদেশ বিমানের বহরে আকাশবীণা ও হংসবলাকা যুক্ত হওয়ার পর আজ যুক্ত হলো ড্রিমলাইনার গাঙচিল।

এবি/রাতদিন