রংপুর নগরীর জিএল রায় রোডের ফায়ার সার্ভিস অফিস। সেখানেই যুগ যুগ ধরে থাকা মন্থনা পুকুরটি ভরাট করা হচ্ছে। একদিকে সেটি যেমন ঐতিহ্য বহন করছে, তেমনি ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপনে একমাত্র পানির উৎসও সেই পুকুর। অথচ ভরাটের মাধ্যমে সেখানে মার্কেট নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে খোদ ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ।
ফায়ার সার্ভিসের এ তৎপরতায় ক্ষুব্ধ নগরবাসীর অনেকে। বিষয়টি নিয়ে নগরজুড়ে শুরু হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। এ ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার, ২০ জুন ফায়ার সার্ভিস অফিসের সামনে মানববন্ধন-সমাবেশের ডাক দিয়েছে মন্থনা পুকুর রক্ষা সংগ্রাম কমিটি।
ওই কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ১৩০৫ বঙ্গাব্দ থেকে ১৩৩০ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত ভবতারিণী দেবী মন্থনা জমিদারী পরিচালনা করেন বর্তমান ফায়ার সার্ভিস অফিস থেকেই। তাঁর মৃত্যুর পর দত্তকপুত্র ভবেন্দ্র নারায়ণ ছিলেন এই জমিদারীর শেষ জমিদার। রংপুর শহরের মন্থনা কাচারি বাড়ি যা বর্তমানে দমকল বাহিনীর আঞ্চলিক কার্যালয় হিসাবে ব্যবহার হচ্ছে। এর পশ্চিম পাশেই রয়েছে পুকুরটি। প্রজাদের সুবিধার্থে প্রায় সোয়া’শ বছর আগে সেটি খনন করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি পুকুরটির পশ্চিমাংশ ভরাট করে সেখানে মার্কেট নির্মাণ করার উদ্যোগ নিয়েছে ফায়ারসার্ভিস কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে পুকুরের পশ্চিমাংশ ভরাট করা হয়েছে। পাশে এনে রাখা হয়েছে ইট, বালু,ও পাথর।
রংপুর ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক ইউনুস আলী বলেন, ‘এত বড় পুকুরের প্রয়োজনীয়তা নেই তাই এমনটা করা হচ্ছে।’
মন্থনা পুকুর রক্ষা সংগ্রাম কমিটি গঠন :
ঐতিহ্যবাহি পুকুরটি ভরাটের তৎপরতা বন্ধে বুধবার, ১৯ জুন নগরীর সুমি কমিউনিটি কেয়ারে অ্যাডভোকট দীপক কুমার সাহার সভাপতিত্বে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে মন্থনা পুকুর রক্ষা সংগ্রাম কমিটি গঠন করা হয়। এতে দীপক কুমার সাহাকে আহবায়ক করে ১৩ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়।
কমিটির অপর সদস্যরা হলেন সাংবাদিক আবু শাহেদ মন্টু, মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন, অধ্যক্ষ খন্দকার ফকরুল আনাম বেন্জু, অ্যাডভোকট মুনির চৌধুরী, রাজনীতিবিদ কাজী মাজিরুল ইসলাম লিটন, গৌতম রায়, আব্দুল কুদ্দুস, দেবদাস ঘোষ দেবু, পলাশ কান্তি নাগ, ব্যবসায়ী আলী হোসেন মোল্লা, তাসরিউল হাসান ও আহসানুল কবীর রাসেল।
এইচএ/রাতদিন