প্রতিবন্ধী রিকশাচালক নাজমুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত পুলিশ কনস্টেবল হাসান আলী ও তার স্ত্রী সাথী বেগমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় রংপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফজলে এলাহী খান এ আদেশ দেন।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাজহাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আশরাফুল ইসলাম দুই আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন জানালে আদালত আগামী রোববার এ বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেন।
গতকাল বুধবার, ২৩ ডিসেম্বর রাতে নাজমুলের স্ত্রী শ্যামলী বেগম বাদী হয়ে ওই দম্পত্তিকে আসামি করে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে একটি মামলা করেন।
এর আগে বুধবার দুপুরে কনস্টেবল হাসানের কোর্টপাড়া ভাড়াবাসা থেকে ওই রিকশাচালকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে কনস্টেবল হাসান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেন এলাকাবাসী। এ ঘটনায় ওইদিনই স্ত্রীসহ কনস্টেবল হাসান আলীকে আটক করে পুলিশ। পরে মামলা হলে তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাজহাট থানার এসআই আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় কনস্টেবল হাসান ও তার স্ত্রী সাথীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে আসামিদের আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন জানানো হয়। আদালত শুনানি শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।’
তাজহাট থানার ওসি আখতারুজ্জামান প্রধান বলেন, ‘রিকশাচালক নাজমুলের ঝুলন্ত মরদেহ ঘরের দরজা ভেঙে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় তার স্ত্রীর দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে মারধর ও আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে যদি হত্যার সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় তাহলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা নথিভুক্ত করা হবে।’
নিহতের স্ত্রী শ্যামলী বেগম ও স্থানীয়দের অভিযোগ, রংপুর পুলিশ সেন্টারে কর্মরত কনস্টেবল হাসান আলী ও তার স্ত্রী সাথী বেগম পিটিয়ে রিকশাচালক নাজমুলকে হত্যা করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, লালমনিরহাটের মুস্তফি এলাকার শারীরিক প্রতিবন্ধী হাসান আলী আশরতপুর ইদগাপাড়ায় বাড়িভাড়া নিয়ে বসবাস করছিলেন। তার পায়ে সমস্যা থাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা ভাড়ায় চালাতেন। ওই রিকশাটি ছিল পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত কনস্টেবল হাসান আলীর।
গত মঙ্গলবার রাতে রিকশা নিয়ে হাসান আলীর সঙ্গে নাজমুলের বিরোধ সৃষ্টি হয়। এরই জেরে তাকে বেধড়ক মারধর করেন হাসান আলী। একপর্যায়ে অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাকে কোটপাড়ার বাড়িতে নিয়ে যান হাসান। বুধবার দুপুরে ওই বাড়ি থেকে নাজমুলের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এইচএ/রাতদিন