বন্ধ চিনিকল চালুসহ ৫ দফা দাবিতে রংপুরে শ্যামপুর চিনিকল এলাকায় অর্ধদিবস হরতাল পালিত হচ্ছে। শ্যামপুর চিনিকল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন এবং আখচাষী কল্যাণ সমিতির ডাকা হরতালে সমর্থন জানিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছেন।
বুধবার, ২৩ ডিসেম্বর ভোর ছয়টা থেকে এই হরতাল কর্মসূচি শুরু হয়।
শ্যামপুর চিনিকল এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বুলু আমিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিন সকাল থেকে স্থানীয় আখচাষী ও চিনিকল শ্রমিকেরা শ্যামপুর চিনিকলের সম্মুখ ফটকে অবস্থান নেন। আখ মাড়াই কার্যক্রম চালুসহ বন্ধ ৬ চিনিকল খুলে দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করছেন তারা। এর আগে সকাল থেকে চিনিকল ক্যাম্পাস এলাকায় খন্ড খন্ড মিছিল বের করেন শ্রমিক ও চাষীরা।
এদিকে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে চিনিকল এলাকায়। পুলিশি বাধার মুখে আন্দোলনরত শ্রমিক ও চাষীরা চিনিকল ক্যাম্পাস এলাকার বাহিরের সড়কে যেতে পারছেন না। তবে হরতালে সমর্থন জানিয়ে চিনিকলের আশপাশের ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ রেখেছেন।
শ্যামপুর চিনিকল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন এর সাধারণ সম্পাদক বুলু আমীন বলেন, পনেরটি চিনি কলের মধ্যে নয়টি চালু করলেও এখনও ছয়টি বন্ধ রয়েছে। তারমধ্যে শ্যামপুর চিনিকল একটি। অবিলম্বে এই চিনিকল চালু করে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধসহ পাঁচ দফা দাবি মেনে নিতে হবে। না হলে ২৪ ডিসেম্বর থেকে আরো কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে।
শ্যামপুর চিনিকল আখচাষী কল্যাণ সমিতির সাধারন সম্পাদক মেহেদি হাসান সাগর বলেন, এই চিনিকলের কারণে আট থেকে দশ হাজার আখচাষী অর্থকারী ফসল আখচাষ করে আর্থিক সচ্ছলতা পেয়েছেন। এর সাথে সম্পৃক্ত ব্যবসায়ী, রিক্সাওয়ালা, নৈশপ্রহরীসহ অনেকে রয়েছে। যারা এই চিনিকলের উপর নির্ভর করে জীবন জীবিকা পরিচালনা করে আসছেন। আমাদের সবার অবস্থা ভীষণ খারাপ।
এর আগে গত ১৯ ও ২০ ডিসেম্বর চিনিকল খুলে দেয়াসহ বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, অবস্থান কর্মসূচি, প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান ও সমাবেশ করেছে আখচাষী ও শ্রমিক কর্মচারীরা।
প্রসংগত, রংপুর জেলার একমাত্র ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান শ্যামপুর চিনিকল। ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই চিনিকল দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এটি জাতীয়করণ করেন। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নে চিনিকলটির অংশিদারীত্ব রয়েছে। চিনিকলটিতে হাজারাে শ্রমিক, কর্মচারী, কর্মকর্তা চাকরির মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন।
উল্লেখ্য, গত ১ ডিসেম্বর দেশের ১৫টি চিনিকলের মধ্যে ছয়টি চিনিকলের মাড়াই বন্ধ রেখে ৯টি চিনিকলের মাড়াই চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপােরেশন। লােকসান কমানাের উদ্দেশ্যে সরকার এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বলে জানা গেছে।