সেরে ওঠার পর আবারও করোনায় আক্রান্ত ৯১, দু:শ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা

চিকিৎসা বিজ্ঞানকে পুরোপুরি বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে নভেল করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) জেনম পরিবর্তনের বিষয়টি। সেরে ওঠা ৯১ রোগী পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বিজ্ঞানীদের কপালে নতুন করে চিন্তার ভাঁজ এঁকে দিয়েছে। রোগতত্ব বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আক্রান্তে ভেতরে থাকা ভাইরাসটিই আবার রিঅ্যাক্টিভ হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ায় পুনরায় আক্রান্ত হওয়া ওই ৯১ রোগীকে সুস্থ হওয়ার পর বাড়িতে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই আবার সংক্রমণ দেখা দেয় বলে রয়টার্সের এক প্রতিবেদন জানিয়েছে।

দেশটির রোগতত্ব বিভাগ ‘কোরিয়াসেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (কেসিডিস) বলছে, ওই ব্যক্তিরা বাইরে থেকে নতুন করে আর আক্রান্ত হননি। তাদের ভেতরে থাকা ভাইরাসটিই আবার রিঅ্যাক্টিভ হয়েছে।

স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, এমন প্রবণতার পেছনে কী কারণ থাকতে পারে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। বিষয়টি নিয়ে গবেষণা চলছে।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, যে একবার আক্রান্ত হলে রোগীর ভেতরে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, সে আর পুনরায় ওই ব্যক্তিকে আক্রান্ত হতে দেয় না। তার শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। কিন্তু সে ধারণাকে নস্যাৎ করে দিয়ে পুনরায় আক্রান্ত করার প্রবণতাও দেখালো নভেল করোনা।

সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ায় নভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সাত হাজার মানুষ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।

কোরিয়া গুরো বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের সংক্রামক ব্যাধির অধ্যাপক কিম ও-জো বলেছেন, ৯১ জন পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি একেবারে নতুন। আর এটা শুরু হলো মাত্র। গত সোমবারে এই সংখ্যা ৫১ জন ছিল।

কিম বলছেন, এটা বরং রিঅ্যাক্টিভ হয়েছে।

কেসিডিসি বলছে, নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি রোগীর শরীরে থাকা ভাইরাসটি রিঅ্যাক্টিভ হয়ে থাকার কারণে হতে পারে।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা আরো বলছেন, এটা টেস্টের ফলস রিপোর্টের কারণেও হতে পারে। তবে নতুন করে আক্রান্ত ব্যক্তি অন্য কাউকে আক্রান্ত করবে না। কিন্তু এ বিষয়টি নিয়ে সরকারের এখনই ভাবা উচিত।

গত শুক্রবার, ১০ এপ্রিল দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন ২৭ জনকে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ৪৫০জন।

গত ফেব্রুয়ারিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার দেশটির ব্যাপকহারে বাড়ছিল। এছাড়া চীনের বাইরে দক্ষিণ কোরিয়ায় আক্রান্তের হার বেশি ছিল। তবে সামাজিক দূরত্ব তত্ত্ব কঠোরভাবে নিশ্চিতকরণ এবং টেস্টিংয়ের হার বাড়ানোর কারণে দ্রুত নিয়ন্ত্রণে চলে আসে নভেল করোনা।