ঈদ উদযাপনে ‘বিশেষ কিছু’র নামে বিষাক্ত ‘স্পিরিট’ পান করে রংপুর ও দিনাজপুরে মোট ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে রংপুরে গত তিন দিনে ১০ জন ও গতকাল বুধবার দিনাজপুরের বিরামপুরে ৬ জনের মৃত্যু হয়।
রংপুরের মৃত ১০ জনই জেলার পীরগঞ্জ ও বদরগঞ্জে স্পিরিট পানে তিন দিনে মৃত্যুবরণ করেন। এছাড়াও অসুস্থ হয়ে হাসপাতাল ও বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন কমপক্ষে ১৫ জন। ঈদ উদযাপন করতে গিয়ে মৃত্যুর এ ঘটনা পীরগঞ্জের শানেরহাট নামক এলাকার ও অপরটি বদরগঞ্জের শ্যামপুরের।
মঙ্গলবার, ২৬ মে সকাল থেকে পীরগঞ্জের শানেরহাট ইউনিয়নে বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। তবে এ বিষয়ে কেউ মুখ না খুললেও নেশা জাতীয় স্পিরিট পানে এমনটা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক শরিফুল ইসলাম প্রাথমিকভাবে এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
পীরগঞ্জের শানেরহাট ইউপির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মন্টু জানান, মঙ্গলবার সকালে শানেরহাট খোলাহাটি গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক (৪৫), পাহাড়পুরের জাইদুল হক (৩৫) ও পার্শ্ববর্তী মিঠাপুকুর উপজেলার বাজিতপুর গ্রামের চন্দন কুমারের (৩০) মৃত্যু হয়। এর আগের দিন সোমবার, ২৫ মে রাতে রায়তি সাদুল্যাপুরের দুলা মিয়া (৫২) এবং হরিরাম সাহাপুরের লাল মিয়া (৩০), মাদক ব্যবসায়ী নওশা (৫০) ও শানেরহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সেলিম সরকার মারা গেছেন। সবমিলিয়ে এখানে ছয় জনের মৃত্যু হয়।
অপর ঘটনায় বদরগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুরে বিষাক্ত রেকটিফায়েড স্পিরিট পান করে ঈদ পালন করতে গিয়ে তিনজনের মৃত্যুর হয়েছে। মৃতরা হলো, বদরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের নুর ইসলাম (৩০) এবং রংপুর সদর উপজেলার চন্দনপাট ইউনিয়নের সরোয়ার হোসেন (৩১) ও মোস্তফা কামাল (৩০)। এদের মধ্যে মঙ্গলবার সকালে সরোয়ার ও মোস্তফা কামাল এবং আজ বুধবার (২৭ মে) সকালে নুর ইসলাম মারা যান। তিনজনই রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। সবমিলিয়ে এখানে মারা যান চার জন।
অন্যদিকে দিনাজপুর জেলার বিরামপুরে বিষাক্ত স্পিরিট পানে স্বামী-স্ত্রীসহ ৬ জনের মৃত্যু ঘটেছে। এ ঘটনায় আরো ৪ জন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
পারিবারিক সূত্রের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বিরামপুর পৌর এলাকার মাহমুদপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের পুত্র আ. মতিন (২২), সুলতান আলীর পুত্র মহসীন আলী (২৭) ও তোজাম্মেলের পুত্র আজিজুলসহ (৩০) আরো বেশ কয়েকজন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নেশা হিসেবে স্পিরিট পান করে। এরপরই তারা অসুস্থ বোধ করলে আজ বুধবার ভোর রাতে একে একে তিন জনের মৃত্যু ঘটে। এরপর দুপুরে শফিকুল ইসলাম (৫৫) ও তার স্ত্রী মঞ্জুয়ারা (৩৫) এবং অমিত রায় (৩০) নামে আরো ৩ জন মারা যান।
বিরামপুর থানার ওসি ৬ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, কি ধরনের মাদক তারা পান করেছিল তা পরীক্ষার জন্য মরদেহ দিনাজপুর মর্গে পাঠানো হয়েছে।