রংপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কাউন্সিলকে ঘিরে নেতাকর্মীরা চাঙ্গা হলেও দুই মেরুতে চলছে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সম্মেলন প্রস্তুতি। দলের একাধিক নেতা মনে করছেন কাউন্সিল হবে ঠিকই, তবে সভাপতি-সম্পাদক পদের নাম ঘোষণা করা হবে কেন্দ্র থেকে। আবার কেউ মনে করছেন দীর্ঘ ১৩ বছর পর কাউন্সিল হচ্ছে তাই কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে সভাপতি সম্পাদক নির্বাচন করা হবে। সম্মেলনকে ঘিরে রংপুর নগরী ছেয়ে গেছে পোস্টারে। কাউন্সিলরদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন পদপ্রার্থীরা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২৬ নভেম্বর জেলা এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। সম্মেলনকে ঘিরে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীদের অনেকেই ঢাকায় গিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে তদবির ও লবিং শুরু করেছেন।
দলের অনেক নেতা মনে করছেন বিগত কমিটির মত এবারও কেন্দ্র থেকে সভাপতি-সম্পাদকের নাম ঘোষণা হতে পারে। এ কারণে মনোনয়ন প্রত্যাশী অনেক নেতাই ঢাকায় গিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে লবিং তদবির করছেন। আবার যাদের ধারণা কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হবে। তারা কাউন্সিলরদের দ্বারে দ্বারে ধর্না দিচ্ছেন। এদিকে কাউন্সিলর ও সাধারণ নেতাকর্মীরা বলছেন, যারা যোগ্য ও ত্যাগী তাদেরকেই যেন নেতৃত্বে আনা হোক।
দলীয় সূত্র মতে, জেলায় সভাপতি পদে ৫ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ৮ জনের নাম শোনা যাচ্ছে। রংপুর মহানগরে সভাপতি প্রার্থীর প্রচার চালাচ্ছেন ৬ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ১০ জন প্রতিদ্বদ্বিতা করবেন বলে দলীয় সুত্রে জানা গেছে।
অন্যদিকে কাউন্সিলের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে দাবি করে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড.রেজাউল করিম রাজু বলেন, দলের সিনিয়র নেতারা যে সিদ্ধান্ত নিবে সেটাই রংপুরের নেতাকর্মীরা মেনে নিবে। কাউন্সিল হবে উৎসবমুখর।
রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম টুটুল বলেন, কাউন্সিলররা চাচ্ছে তাদের সরাসরি ভোটে সভাপতি-সম্পাদক নির্বাচিত হউক। এর পরে কেন্দ্র থেকে যদি অন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হয় তাহলে তাই আমাদের মেনে নিতে হবে। কারণ আমরা কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মেনে চলব।
রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল বলেন, ‘কাউন্সিলে কেন্দ্রীয় নেতারা যে সিদ্ধান্ত নিবে তাই আমরা মেনে নিতে বাধ্য। আমি ছাত্রাবস্থা থেকে রাজনীতি করছি। আশা করি দলের নেতাকর্মীরা আমাকে মূল্যায়ন করবেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালে রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে ২/৩টি প্যানেল হওয়ায় শেষ পর্যন্ত কাউন্সিল না করে এবং কমিটি ঘোষণা না করেই সে সময় কেন্দ্রীয় নেতারা রংপুর ত্যাগ করেন। এরপর ৫ বছর পর ২০১১ সালে ঢাকা থেকে জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়।
প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা আবুল মনসুর আহাম্মদকে সভাপতি ও রেজাউল করিম রাজুকে সাধারণ সম্পাদক করা হয় ২০১১ সালের পর রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়নি। অপরদিকে মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হয় ২০০৭ সালে। এর পর মহানগরেরও কোন কাউন্সিল হয়নি।
এনএ/রাতদিন