লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে দীর্ঘ চার মাস ধরে চিকিৎসাধীন অন্তঃসত্ত্বা কে এই নারী ? অনেক চেষ্টা করেও তার পরিচয় মিলছে না। ওই নারীর আত্মীয়স্বজন কাউকেই পাচ্ছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ।
রোববার, ২৬ জানুয়ারি দুপুরে হাসপাতালে কর্তব্যরত সমাজসেবা কর্মকর্তা এরশাদ আলী জানান, অজ্ঞাত এই নারীর পরিচয় বের করার চেষ্টা চলছে । কিন্তু তার কোন আত্নীয় স্বজনকে পাওয়া যাচ্ছেনা।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাকে সমাজসেবা বিভাগ সহায়তা করবে । তিনি এখন লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
গাইনি ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স চামেলী বেগম বলেন, ওই নারী কথা খুবই কম বলেন। কথা বলার সময় সে হাসি দিয়েই কথা বলেন । অনেকটা শান্ত প্রকৃতির। কারও কোন রকম ক্ষতি করেন না। কেউ তাকে চিনে থাকলে হাসপাতালে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করেন চামেলী বেগম।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, চার মাস আগে সন্ধ্যায় লালমনিরহাট হাসপাতালের ভেতরের গেটের সামনে পলিথিন বিছিয়ে তার ওপর শুয়ে থাকা অজ্ঞাত এই নারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
কয়েক দিন চিকিৎসার পর তিনি কাউকে না বলে নিরুদ্দেশ হলেও নিজেই আবার হাসপাতালে ফিরে আসেন । বর্তমানে সদর হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার গাইনি ওয়ার্ডে তার চিকিৎসা চলছে। হাসপাতালে নার্স ও চিকিৎসকরা অনেকভাবে তার পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।
হাসপাতাল সূত্র আরও জানায়, অন্তঃসত্ত্বা ওই নারী নিজের পরিচয় দিতে ভয় পাচ্ছেন। সবার কথা বুঝতে পারলেও কোনো উত্তর দিচ্ছেন না।
ধারণা করা হচ্ছে, বড় ধরনের কোনো মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আতঙ্কিত হয়ে ওই নারী মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থায় এখন দরকার তার আপনজনের পরিচর্যা। তার পরিচয় শনাক্ত করে উপযুক্ত চিকিৎসা দেওয়া হলে মানসিকভাবে তাকে সুস্থ করা যাবে। তাই তার পরিচয় জানার চেষ্টা করছে সমাজসেবা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এদিকে হাসপাতালে সরকারি সহায়তায় শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসকরা নিশ্চিত হন, ওই নারী অন্তঃসত্ত্বা। আগামী মার্চ মাসে তিনি সন্তান প্রসব করতে পারেন বলে আলট্রাসনোগ্রাম প্রতিবেদন দেখে নিশ্চিত হয়েছেন চিকিৎসকরা।
এ বিষয়ে লালমনিরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কাসেম আলী বলেন, অন্তঃসত্ত্বা নারীকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সব ধরনের সহযোগিতা করছে। যতদিন হাসপাতালে চিকিৎসা চলবে, ততদিন তাকে সহায়তা করবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ।
এসকে/রাতদিন