একটি সুখী দেশ হিসেবেই পরিচিত ভুটান। যেখানে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত টেলিভিশন দেখার অনুমতি পর্যন্ত ছিল না। এবার দেশটি ‘অস্বাভাবিক’ এক সিদ্ধান্তে তামাকের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল। চলমান করোনাভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে।! এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এফপি।
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত এ দেশে ধুমপানকে পাপ হিসেবে দেখা হয়। ভুটানে ১৭২৯ সালে প্রথম ধুমপান নিয়ন্ত্রণ আইন পাস হয়। এদেশে মানুষের বিশ্বাস, তামাক গাছের জন্ম অসুরের রক্ত থেকে।
৭ লাখ ৫০ হাজার মানুষের এ দেশে ২০১০ সালে এক আইনে তামাক বিক্রি, উৎপাদন ও বিতরণ নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু ধুমপায়ীদের জন্য সীমিত আকারে তামাকজাত পণ্য আমদানির অনুমতি দেয়া হয়, যেখানে তাদের উচ্চহারে ভ্যাট দিতে হয়। এতে করে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে সীমান্ত দিয়ে সিগারেট আমদানিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে কালোবাজারি চক্র।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হলে সীমান্ত বন্ধ করে দেয় ভুটান। দেশটি ভাইরাস দমনে সফল হলেও এতে বিপাকে পড়েন চোরাকারবারীরা। সীমান্ত বন্ধ থাকায় তারা ভারত থেকে সিগারেট আনতে পারছিল না। এতে ভুটানে সিগারেটের দাম চারগুণ বেড়ে যায়। নিষেধাজ্ঞার মধ্যে কেউ কেউ চুরি করে ভারত থেকে সিগারেট আনছিলেন। তাদেরই একজন ভারত থেকে আসার পর করোনাভাইরাসে পজিটিভ হন, যিনি সীমান্ত শহর ফুয়েনশোলিংয়ের বাসিন্দা।
এ ঘটনার পর তামাকের ওপর নিধেধাজ্ঞার বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবতে থাকে প্রশাসন। প্রধানমন্ত্রী লোতে শেরিং নিজেও একজন চিকিৎসক, যিনি প্রতি সপ্তাহে ছুটির দিন এখনো রোগী দেখেন। সিগারেটের চাহিদা পূরণে ও সীমান্ত পেরিয়ে ভাইরাস আসা রুখতে তার প্রশাসন তামাকের ওপর থেকে দশকব্যাপী নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। যদিও শেরিং জানান, এই পরিবর্তনটি সাময়িক।
এই সিদ্ধান্তের ফলে ধুমপায়ীরা এখন চাইলেই সরকারি মালিকানাধীন ভ্যাটমুক্ত স্টোর থেকে তামাকজাত পণ্য কিনতে পারছেন ও একে মহামারীকালীন লকডাউনের সময় জরুরি পণ্য হিসেবেও দেখানো হচ্ছে।
রাজধানী থিম্পুর ‘ডিউটি ফ্রি’ দোকানের শাখা ব্যবস্থাপক দেচেন দেমা বলেন, প্রতিদিন এক হাজারেরও বেশি কল পাচ্ছেন তিনি এবং সকাল ৮টা থেকে গভীর রাত অবধি কাজ করতে হচ্ছে তাদের। দেমার কথায়, ‘আমরা অনেক দেদার কল পাচ্ছি এবং এমনকি খাওয়ার সময়টুকুও পাচ্ছি না।’
এইচএ/রাতদিন