ঠাকুরগাঁওয়ের এক গৃহবধূকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন পিটিয়ে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জেলার হরিপুরে ময়না খাতুন নামে ওই গৃহবধুর স্বামী জাকির হোসেনসহ তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা হয়েছে।
ডাক্তারের কাছে স্ত্রীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর হরিপুর উপজেলা হাসপাতালে স্ত্রীর লাশ ফেলে রেখে স্বামী জাকির হোসেন উধাও হয়ে গেছেন।
এই ঘটনায় একটি হত্যা মামলা করেছেন নিহতের বড় ভাই আশরাফ আলী। মামলায় স্বামী জাকির হোসেনসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
শুক্রবার, ১ নভেম্বর সকালে নিহত গৃহবধূর বড় ভাই হরিপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করলে পুলিশ বেলা ১১টায় হরিপুর উপজেলা হাসপাতাল থেকে ময়না খাতুনের লাশ উদ্ধার করে দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য ঠাকুরগাঁও মর্গে প্রেরণ করেন।
ময়না খাতুন পীরগঞ্জ উপজেলার আব্দুল কাদেরের মেয়ে।
এই ঘটনার পর থেকে জাকির হোসেনসহ তার পরিবারের লোকজন আত্মগোপনে চলে গেছেন।
নিহত গৃহবধূর বড় ভাই আশরাফুল আলী জানান, ২০০৪ সালে ময়না খাতুনের সঙ্গে হরিপুর উপজেলার জয়নালের ছেলে জাকির হোসেনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর ময়না তার স্বামীর সংসার নিয়ে ভালোই চলছিল। কিছুদিন যেতে না যেতেই জাকির হোসেন মাদক সেবনে আসক্ত হয়ে পড়ে। জাকির হোসেন মাদক সেবনে আসক্ত হওয়ার পর থেকেই ময়নাকে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে। স্ত্রীকে নির্যাতনের কারণে জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকবার গ্রাম্য সালিশ বৈঠকও হয়।
এরই মধ্যে জাকির হোসেন দিনাজপুরে সুরভী নামে এক মেয়ের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলে। একপর্যায়ে জাকির হোসেন ওই মেয়েকে কিছুদিন আগে তার বোনের অজান্তে বিয়েও করে ফেলে। এই ঘটনাটি নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। মূলত এই দ্বন্দ্বের জেরেই ময়না খাতুনকে জাকির হোসেনসহ তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন শুক্রবার রাতে কয়েক দফা মারপিট করেন। এই মারপিটের কারণেই ময়না খাতুনের মৃত্যু হয়।
হরিপুর থানার ওসি আমিরুজ্জামান বলেন, নিহতের বড় ভাইয়ের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে থানায় একটি হত্যা মামলা নেয়া হয়েছে। পরে গৃহবধূর লাশ হরিপুর হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঠাকুরগাঁও মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে প্রকৃত ঘটনা বের হবে, আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান ওসি আমিরুজ্জামান।
জেএম/রাতদিন