লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের একজন ইউপি সদস্য দরিদ্রদের বদলে নিজের ভাই ও ভাবির নামে সরকারি ঘর বরাদ্ধ দিয়েছেন। ‘জমি আছে ঘর নেই’ ও ‘দুর্যোগ সহনীয়’ প্রকল্পের ওই বাড়ি দুটির একটি আবার ভাড়া দিয়ে টাকা তুলছেন সাইদুল ইসলাম নামের ওই ইউপি সদস্য।
সাইদুল ইসলাম দহগ্রাম ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। পরিবারের সদস্যদের নামে সরকারি ঘর বরাদ্ধ দেওয়া ঠিক হয়নি বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই ইউপি সদস্যের বড় ভাই শাহ জামালের স্ত্রী হালিমা বেগমের নামে কয়েক বছর আগে ‘জমি আছে ঘর নেই’ প্রকল্পের একটি ঘর বরাদ্ধ দেন সাইদুল ইসলাম। পরে ভাবির নামে বরাদ্ধ দেয়া বাড়িটি কৌশলে নিজের জমিতে নির্মাণ করে নিয়ে দখল করেন। এরপর সেই বাড়ি মানুষের কাছে ভাড়া দিয়ে টাকা তুলতেন সাইদুল।
সাংবাদিকরা গিয়ে ওই বাড়িতে ভাড়াটিয়াদের দেখতে পান। বিষয়টি বুঝতে পেরে মালামালসহ ভাড়াটিয়াদেরকে পরদিনই অন্যত্র সরিয়ে দেন ওই ইউপি সদস্য।
এদিকে সম্প্রতি ওই ইউপি সদস্য তার বড় ভাই শাহ জামালের নামেও দুর্যোগ সহনীয় একটি সরকারি বাড়ি বরাদ্ধ করিয়ে নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই ইউনিয়নের একজন ইউপি সদস্য জানান, সদস্য নির্বাচিত হওয়ার আগে সাইদুল ইসলামের আর্থিক খারাপ ছিল। তবে দুই দফায় ইউপি সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি এখন অনেক টাকার মালিক। হয়েছে ট্রাক, ট্রলি, জমিসহ অনেক সম্পদ।
ভাই-ভাবির নামে সরকারি বাড়ি বরাদ্ধ দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন ইউপি সদস্য সাইদুল ইসলাম। তিনি দাবি করেন, ‘আমার ভাবি স্বামী পরিত্যক্তা । বড় ভাই দ্বিতীয় বিয়ে করে আলাদা থাকেন। ফলে ভাবির নামে ঘরটি দেওয়া হয়েছে।’ তবে আবারও ভাইয়ের নামে আরও একটি সরকারি ঘর বরাদ্ধের বিষয়ে তিনি কোনো সদোত্তর দিতে পারেননি।
দহগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেন প্রধান বলেন, ‘একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে আপন ভাই ও ভাবির নামে সরকারি বাড়ি বরাদ্ধ নেওয়া ঠিক করেনি তিনি’।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক আবু জাফর এ বিষয়ে খোঁজ নিবেন জানিয়ে তিনিও বলেন, ‘ভাই-ভাবির নামে ঘর বরাদ্ধ নেওয়া ঠিক হয়নি’।
এবি/রাতদিন