রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা সদরের বাজারে প্রতি কেজি সবজিতে ২০ টাকা বেড়েছে। আজ বৃহষ্পতিবার, ১৫ এপ্রিল লকডাউনের ২য় দিনে ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে সবজির চড়া দাম হওয়ায় ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠেছে। উপজেলা বাজার মনিটরিং কমিটি নিষ্ক্রিয় থাকায় ব্যবসায়ীরা চড়া দামে সবজি বিক্রি করছেন বলে ক্রেতারা অভিযোগ করছেন।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার বিখ্যাত সবজির হাট খালাশপীর, চতরা, মাদারগঞ্জ, বড়দরগাহ, ধাপেরহাট ও বালুয়াহাটসহ বিভিন্ন হাটে উপজেলার ৩৩১টি গ্রাম ছাড়াও আশপাশ উপজেলার হাজারো কৃষক তাদের উৎপাদিত সবজি বিক্রি করে থাকেন। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন স্থানেও সবজি পাইকারী দরে বিক্রি করা হয়।
ওই হাটগুলো থেকে বিভিন্ন জেলার অসংখ্য কাঁচামাল ব্যবসায়ী পাইকারী দরে সবজি কিনে নিয়ে যান। কিন্তু লকডাউন চলমান থাকায় কাঁচামাল ব্যবসায়ীরা না আসায় কৃষকরা তাদের সবজি বেশি মুল্যে বিক্রি করতে পারছেন না বলে কৃষকরা অভিযোগ করছেন।
আজ বৃহষ্পতিবার ধাপেরহাটে প্রতি মন বেগুন ১৬০০ টাকা, পটল ১৮০০ টাকা, করলা ও গাজর ৯০০ টাকায় কেনাবেচা হয়েছে। অপরদিকে মাত্র ৭ কিলোমিটার দূরের ধাপেরহাট থেকে কাঁচামাল ব্যবসায়ীরা ওইসব সবজি কিনে এনে পীরগঞ্জ বাজারে প্রতি কেজি পটল, বেগুন ও সজিনা ৬০ টাকা, করলা ও গাজর ৪০ টাকা, আলু ৩০ টাকা, মরিচ ও পেঁয়াজ ৪০ টাকা, প্রতি হালি কাঁচকলা ও লেবু ৪০ টাকায় বিক্রি করছেন। উপজেলা সদর থেকে হাটগুলো সর্বোচ্চ ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ওই দুরত্বের ব্যবধানেই কেজি প্রতি ১৫-২০ টাকা বেশিতে খুচরা বাজারে সবজি বিক্রি হয়ে থাকে।
পীরগঞ্জ বাজারের একাধিক সবজি বিক্রেতা নাম না প্রকাশের শর্তে জানান, কয়েকদিন আগে শিলাবৃষ্টিতে কাঁচামালের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় সবজির দাম প্রতি কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। আমরা বিক্রি করতেও লজ্জা পাচ্ছি। কারণ গতকাল বুধবারই বেগুন, পটল, গাজরসহ অন্যান্য সবজি প্রতি কেজি ১৫-২০ টাকা কমে বিক্রি করেছি।
উপজেলার ধুলগাড়ী গ্রামের কৃষক শাহ আলম, বাহাদুরপুরের মান্নান, রামনাথপুরের জয়নাল জানায়, হাটে সবজির দাম নেই। অথচ বাজাওে খুব বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এটা ব্যবসায়ীদের কারসাজি।
বৃহষ্পতিবার পীরগঞ্জ বাজারে আসা ক্রেতা ধনশালার রওশন মিয়া, মালু মিয়া, নিয়ামতপুরের রাঙ্গা মিয়া বলেন, ‘হঠাৎ করি তরকারির (সবজি) দাম বাড়ি গেল ক্যা। হামার এটিই তরকারির আবাদ (চাষ) হয়। আর এটিই দাম বেশি’।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আলাউদ্দিন ভুঞা জনি বলেন, ‘বাজার মনিটরিং কমিটির আহŸায়ক ইউএনও স্যার। আমি তার সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো’।
ইউএনও বিরোদা রানী রায় বলেন, ‘বাজার মনিটরিং কমিটিতে আমি নেই। তবে মনিটরিং করতে পারি। এখনই অ্যাসিল্যান্ডকে পীরগঞ্জ বাজারটি মনিটরিং করার জন্য পাঠাচ্ছি’।
এইচএ/রাতদিন