অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র তেজ কিছুটা কমে আজ শনিবার, ৪ মে সকাল ৬টায় খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আঘাত হেনেছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ কারণে এসব এলাকাসহ প্রায় সারাদেশে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ঝড়টি ক্রমশ দুর্বল হয়ে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
আবহাওয়াবিদরা বলেছন, ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের স্থলভাগ দিয়ে প্রবেশ করায় তা দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। এতে করে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা কম। সংশ্লিষ্ট এলাকার সাগর ও নদী উত্তাল রয়েছে।
‘ফণী’ নিয়ে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমদ সকাল ৮টার দিকে গণমাধ্যমকে ব্রিফ করেছেন।
শামসুদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এখন ফণী খুলনা-সাতক্ষীরা ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড়ের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার। এবং এটি উত্তর উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। অগ্রসর হয়ে পাবনা, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ অঞ্চলে অবস্থান করবে আরো পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা। এই সময়ে এসব অঞ্চলে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করবে।’
‘এজন্য আমরা মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছি। ট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এবং কক্সবাজারকে চার নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছি।’
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃষ্টিপাতের ব্যাপারে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আরো বলেন, ঘর্ণিঝড় বাংলাদেশে প্রবেশের কারণে বরিশালে বাতাসের একটানা গতিবেগ রেকর্ড করা হয়েছে ঘণ্টায় ৭৪ কিলোমিটার। এবং চাঁদপুরে ১২৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ রেকর্ড করা হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়।
ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে যে আশঙ্কা করা হচ্ছিল তা থেকে কিছুটা শঙ্কামুক্ত বলেও জানান আবাহওয়া অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা। তিনি আরো বলেন, এই ধরনের ঘূর্ণিঝড়ে জীবনহানি হয়ে থাকে, সম্পদহানী হয়ে থাকে। কিন্তু পূর্বাভাস এবং ব্যাপক প্রস্তুতির কারণে সেই ক্ষয়ক্ষতি থেকে আমরা বেঁচে যেতে পেরেছি।’
গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে ভারতের ওডিশা রাজ্যে ‘ফণী’র তাণ্ডব শুরু হয়। সেখানকার পুরি উপকূলে প্রায় ২০০ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়ে। সেখানে আটজনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।
এরপর সেটি পশ্চিমবঙ্গে আঘাত আনে। মধ্যরাতের পর ভারতের এই রাজ্যে প্রবেশ করে ‘ফণী’। ৯০ কিলোমিটার বেগে খড়গপুরে এটি আঘাত হানে। পরে আরামবাগ, কাটোয়া, নদীয়া হয়ে গেছে মুর্শিদাবাদে। তারপর সেখান থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে আলিপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম।
এবি/রাতদিন