চার বছর বয়স থেকেই তিনি গান চর্চায় ঠোট মিয়েলেছেন পিতার সাথে। গান শিখেছেন পিতা মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমানের কাছে। তিনি আর কেউ নন। রংপুর মহানগরীর জাহাজ কোম্পানি মোড়ের বাসিন্দা মাহমুদা আক্তার মিতু। এ নামে অব্যশ কেউ তাকে চিনবে না। তার বড় পরিচয় তিনি একজন দেশ সেরা কণ্ঠশিল্পী।
মিতু প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে নিয়েছেন অর্জনের স্বীকৃতির প্রাপ্তি। কৃতিত্বের স্বীকৃতিও পেয়েছেন তিনি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ জায়গায়। ওস্তাদ রজনিত কুমার রায়ের কাছে তালিম নিয়ে গান শুরু করে। এর পর জিয়াউল হক লিপু, তমাল কান্তি লাহিড়ীর কাছে। তালিম নিয়েছেন শিশু একাডেমী ও শিল্পকলায়।
রংপুর পুলিশ লাইন স্কুল এন্ড কলেজে পড়াশুনা ফাঁকে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতেন। ২০১০ সালে বাংলালিংক-সাউন্ডটাচের আয়োজনে ভাওয়াইয়া উৎসবে রংপুর বিভাগের আটজেলার ৭ হাজার প্রতিযোগীর মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেন মিতু। মরহুম সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কাছ থেকে নিয়েছেন ২০১১ সালে কৃতিত্বের পুরস্কার। ২০১৪ সালে ইসলামিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত স্কুল পর্যায়ে হামদ নাত প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সারা বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম হয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে নিয়েছিলেন স্বীকৃতির সনদ। ২০১৯ সালে জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো এনটিভির সিলন সুপার সিংগারের প্রায় সাতমাস ধরে চলা ১৫ হাজার প্রতিযোগীর মধ্যে সেরা দশে অবস্থান করেছেন মিতু।
আধুনিক, লোক সঙ্গীত, ভাওয়াইয়া গান করেন তিনি। এ পর্যন্ত স্টেজ পারফর্ম করেছেন হাজারেও বেশি। রংপুর বিভাগের বাইরে চট্রগাম, ঢাকা, কুমিল্লা ও সিরাজগঞ্জ করেছেন স্টেজ পারফর্ম। দেশের বাইরে পারফর্ম করেছেন ভারতে। ২০০৪ সাল থেকে রংপুর বেতারে গান করেন। বিটিভির তালিকাভূক্ত শিল্পি তিনি। জড়িত আছেন রংপুর নাট্যকেন্দ্র, অভিযাত্রিক, সাউন্ড টাচ, ভাওয়াইয়া একাডেমীর সাথে।
শিল্পী মিতুর সাথে কথা হলে রাতদিন.নিউজকে তিনি বলেন, বাবার কারণে আজ এত আমার অর্জনের স্বীকৃতি। আব্বু চ্যাংদোলা করে ধরে হারমোনিয়াম শিখিয়েছেন আমাকে। তবে আমার একটাই দুঃখ, শিল্পীদের দিনে দিনে মুল্যয়ন কমে যাচ্ছে। এজন্য আমরা নিজেরাই অনেকটা দায়ী। নানান ধরণের যন্ত্রপাতি দিয়ে কন্ঠে গান গাওয়া হচ্ছে। তাতে করে শিল্পীদের মূল কন্ঠের সুর ফেলছে।
মিতু আরো জানালেন, শিল্পীদের কাছে আমার অনুরোধ, আসুন সবাই আমরা সঙ্গীত শিখে করি। সেটা যদি দুই তিনটি গান হয়, তাতেই যেন আমরা সন্তুষ্ট থাকি। অনেক শিল্পী আছেন যারা ইউটিউবে গান করে শিল্পী হিসেবে নাম জাহির করছেন। এটা যেন না হয়।
তিনি আরো বলেন. গানকে আমি আমার সন্তানের মতোই ভালোবাসি। গান ছাড়া আমি আমার জীবনকে কল্পনাই করতে পারি না। আমি চাই সুস্থধারার গান। সুস্থ সংস্কৃতি চর্চার বিকাশ। অসুস্থ গান, অসুস্থ সঙ্গতি চর্চা থেকে আমাদের সবাইকে বেরিয়ে আসতে হবে।
মাহমুদা আক্তার মিতু আরো বলেন, বিয়ের আগে আমার গানের অনুপ্রেরণা ছিলেন আমার পিতা। বিয়ের পর সেই অনুপ্রেরণা দিয়ে যাচ্ছেন আমার স্বামী স্বামী রংপুরের অতি পরিচিত জন তানবীর হোসেন আশরাফী। যিনি তার নিজের কর্ম আর প্রত্যয় মিলে তৈরি করেছেন বৃহৎ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানসহ সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান।
এনএ/রাতদিন