পাটগ্রামে ছক্কর আলীর চক্করে নিঃস্ব পাঁচ পরিবার, বসতভিটা ফিরে পেতে সংবাদ সম্মেলন

লালমনিরহাটের পাটগ্রামে খাস জমির বন্দোবস্ত না পাওয়ায় এবং খাসজমির বসতভিটা থেকে তাঁড়িয়ে দেয়ার চেষ্টার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভূমিহীন পাঁচ কৃষক পরিবার। উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের কতিপয় প্রভাবশালী ব্যাক্তির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনে সংক্ষুব্ধ ওই পাঁচটি পরিবার।

আজ রোববার, ৩১ অক্টোবর ওই ইউনিয়নের ঝালঙ্গী গ্রামের ভূমিহীন ওই কৃষকদের বসতবাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, ভূমিহীন খোরশেদ আলীর(৭০) মেয়ে সাহেরা খাতুন (৩০)।

এতে বলা হয়, ওই ইউনিয়নের ১১.৩৭ একর জমির এসএ মালিক বানীকান্ত নিয়োগী সপরিবারে নিরুদ্দেশ থাকায় সরকার ওই জমি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ২২ জন ভূমিহীন পরিবারকে প্রথমে একসনা মেয়াদে লিজ প্রদান করে। ভূমিহীন দরিদ্র্র এই পাঁচটি পরিবার দীর্ঘ ৩১ বছর থেকে ওই জমিতে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছেন।

সম্প্রতি কবুলিয়তের জন্য উপজেলা ভূমি কার্যালয়ে তাদের পক্ষ থেকে একাধিকবার আবেদন করা হয়। কিন্তু অদৃশ্য কারণে পাঁচ পরিবারের আবেদনপত্র গুলো গায়েব হয়ে যায়।

পরবর্তীতে তাদেরকে ওই এলাকার নিজাম উদ্দিনের ছেলে ছক্কর আলীর মাধ্যমে খাস জমির কবুলিয়ত দলিল করে নিতে উপজেলা ভূমি অফিসে যোগাযোগ করতে বলা হয়।

ছক্কর আলী জমির বন্দোবস্ত করে দেওয়ার কথা বলে ওই পাঁচ পরিবারের নিকট বিভিন্ন সময়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। উপরন্তু কবুলিয়তের ব্যবস্থা না করে ভূমি কর্মকর্তার যোগসাজসে টাকার বিনিময়ে ছক্কর আলীর মা কালীগঞ্জ উপজেলার চাপারহাটের আয়শা বেগম, শ্রীরামপুর ইউনিয়নের বেলেরবাড়ি গ্রামের ভাজতি জামাই আব্দুর রশিদ, ভগ্নিপতি সুরুজ, ভাগিনা তোতাসহ প্রত্যেকের নামে ৫০ শতক করে জমির কবুলিয়ত দলিল করে নেয়।

এভাবে এই ছক্কর আলী প্রায় ৭ একর জমির কবুলিয়ত দলিল করে নেন। এরপর থেকে ওই পাঁচ পরিবারের বসতভিটাসহ ফসলি জমি দখলের জন্য উঠেপড়ে লাগেন তিনি। তাদের বিরুদ্ধে আদালতে হয়রানিমূলক মামলাও দেন ছক্কর আলী

সংবাদ সম্মেলনে আরও দাবি করা হয়, ছক্কর আলীর স্বজনেরা ধনাঢ্য, ভূমিহীন না হয়েও নিজেদেরকে ভূমিহীন উল্লেখ করে ২০১৮ সালে সরকারি খাস জমির কবুলিয়ত দলিল করে নেয়। ওই কবুলিয়ত দলিল গুলো লালমনিরহাট অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নিকট বাতিলের আবেদন করে ভূমিহীন পরিবার গুলে।

আবেদনপত্রে লালমনিরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন সুপারিশ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, ছক্কর আলী ও তাঁর দলবল বসতবাড়ি, ধান খেত দখলে নিতে ভয়ভীতি, হুমকি দিচ্ছে। এমতাবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ও সাহায্য কামনা করেন ওই পাঁট পরিবারের সদস্যরা।

এ ব্যাপারে ছক্কর আলীর সাথে কথা হলে তিনি আত্মীয়-স্বজনের নামে জমি কবুলিয়তের সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ওই পাঁচ পরিবার সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। সরকার আমাদেরকে পক্ষভুক্ত করেছে। আমরা সরকারের পক্ষে থেকে মামলা লড়ছি। এজন্য সরকার আমাদেরকে জমি কবুলিয়ত করে দিয়েছে।

জেএম/রাতদিন