‘পিটিয়ে লাশ নরসিংদী পাঠিয়ে দেব। উপজেলা পরিষদ কি তোর বাবার সম্পত্তি, উপজেলা পরিষদ কি তুই চালাবি?’-হুমকির বিষয়ে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েসের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি(জিডি) করেছেন। ‘হত্যার হুমকি’ বিষয়ে করা জিডিটি আজ রোববার, ১৫ নভেম্বর আদিতমারী থানায় নভিভূক্ত করা হয়। পাশাপাশি অন্য একটি জিডিও করা হয়েছে প্রায় একই সময়ে।
আদিতমারী থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জিডি দুটি নথিভূক্ত হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েস দাবি করেন, ‘আমাকে ফাঁসাতেই ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। সে কারণেই জিডি করা হয়েছে’।
ইউএনও’র করা জিডিতে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার উপজেলা পরিষদের মাসিক সাধারণ সভায় ভিজিডি ও মাতৃত্বকালীন ভাতার তালিকায় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নিজের অংশ দাবি করেন। এতে বিধি মোতাবেক তালিকা প্রস্তুত করার জন্য উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে বলা হলে উপজেলা চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে সভা অসমাপ্ত রেখে বের হয়ে চলে আসেন। পরে ব্যক্তিগত সহকারী হুমায়ুনকে ইউএনও অফিসের সিসিটিভি ক্যামেরার বিদ্যুৎ সংযোগ খুলে ফেলার নির্দেশ দেন উপজেলা চেয়ারম্যান। এর কারণ জানতে চাইলে ইউএনও মনসুর উদ্দিনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। এসময় বেশি কথা বললে ‘পিটিয়ে লাশ নরসিংদী পাঠিয়ে দেব। উপজেলা পরিষদ কি তোর বাবার সম্পত্তি, উপজেলা পরিষদ কি তুই চালাবি?’ বলেও চেয়ারম্যান হুমকি দেন বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
আদিতমারী থানায় অপর জিডিটি করেছেন উপজেলা পরিষদের মুদ্রাক্ষরিক কাম-কম্পিউটার অপারেটর হাবিবুর রহমান। তিনি এতে দাবি করেন, রোববার অফিসে এসে ভিতরের পকেট গেট খোলা দেখতে পেয়ে অফিসের চার সহকর্মীকে নিয়ে কাগজপত্র যাচাইয়ের সময় উপজেলা পরিষদের মাসিক সাধারণ সভার নথি, উপস্থিত হাজিরা, কর্মচারীদের হাজিরা খাতা এবং উপজেলা পরিষদের বেশ কিছু সরকারি নথি খুঁজে পাওয়া যায়নি। একই দিন উপজেলা চেয়ারম্যান চেক বইটিতে ১০০ পাতা আছে কিনা দেখতে চেয়ে হাতে নেন। এ অবস্থায় উপজেলার রাজস্ব তহবিলের (হিসাব নং-৩৩০০৪৯৬৪, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড) চেক বইয়ের ১৯ টি পাতা ছিঁড়ে ফেলেন। উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন ব্যয় পরিশোধের জন্য চেকগুলোতে যৌথ স্বাক্ষর ছিল।
এইচএ/রাতদিন