ওয়াহিদা খানমের মাথায় ‘ইনফেকশনের’ ভয়, বাবার শরীরের অর্ধেক অংশ অবশ

দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের সেন্স (অনুভূতি) আছে, কথাও বলছেন বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।

তিনি বলেন, তবে ভয় ইনফেকশন (সংক্রমণ) নিয়ে। ইনফেকশন না হলে শারীরিক অবস্থার উন্নতিটা স্বাভাবিক হবে।

আজ শনিবার, ৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওয়াহিদা খানমের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেওয়ার পর সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, অপারেশনের পর তিনি কথা বলতে পারছেন। বর্তমানে তাঁর অনুভূতি আছে, তবে শক্তি নেই। ডান হাত, ডান পা উঠাতে পারছেন না। যেহেতু ওনার মাথার অংশটা কাটা ছিল এবং ময়লা ছিল অনেক, এর ফলে ওই জায়গাটাতে ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কা আছে। এটাই এখন আমাদের ভয়।

এদিকে চিকিৎসাধীন ওয়াহিদা খানমকে দেখতে এসে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খুরশিদ আলম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আপাতত তাঁকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার দরকার নেই, তবে সংক্রমণের আশঙ্কা আছে।

ওয়াহিদা খানমের মাথায় অস্ত্রোপচারের পর তিনি ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে আছেন।

ওমর আলী শেখের শরীরের অর্ধেক অংশ অবশ:

ইউএনও ওয়াহিদা খানমের বাবা ওমর আলী শেখের (৬৫) কোমরের নিচের অংশ পুরোটাই অবশ হয়ে গেছে। কথা বলতে ও খেতে পারলেও চলাচল করতে পারছেন না তিনি। আপাতত অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন না হলেও পুরোপুরি সেরে উঠতে তার দীর্ঘ সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

আ শনিবার, ৫ সেপ্টেম্বর রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও ওমর আলীর ছেলে শেখ ফরিদ উদ্দীনের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানতে পেরেছেন সাংবাদিকরা।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. তোফায়েল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ওমর আলী শেখের আগে থেকে ডায়াবেটিস ছিল। ঘটনার রাতে তিনি ঘাড়ে আঘাত পান। এতে স্পাইনাল কর্ডে গুরুতর আঘাত লাগে তার। সাধারণত এ ধরনের জটিলতায় চার হাত-পা অবশ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে তার দুই হাত কিছুটা সচল থাকলেও নাভির নিচ থেকে পুরো নিচের অংশ অবশ হয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন,  এ ধরনের সমস্যা সেরে উঠতে দুই থেকে তিন মাস পর্যন্ত সময় লাগে। আপাতত তার অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন না হলেও দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা প্রয়োজন। একটি চিকিৎসক দলের মাধ্যমে তার চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

ওমর আলী শেখের ছেলে শেখ ফরিদ উদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে আমার বাবার এ সমস্যা দেখা দেয়। বিষয়টি রংপুর জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। আপাতত ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি।

গত বুধবারম ২ সেপ্টেম্বর রাতে বাসভবনের ভেন্টিলেটর দিয়ে বাসায় ঢুকে ওয়াহিদা খানম ও তাঁর বাবা ওমর আলীর ওপর হাতুড়ি দিয়ে হামলা চালানো হয়। গুরুতর আহত ওয়াহিদাকে বৃহস্পতিবার ঢাকার জাতীয় নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে নেয়া হয়।

এবি/রাতদিন