রাজধানীর বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকান্ডে হতাহতের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাসভীর উল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তিনি ওই ভবনটির বর্ধিত অংশের মালিক।
শনিবার, ৩০ মার্চ রাত পৌনে ১১টার দিকে বারিধারার বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমগুলোকে জানিয়েছেন ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এডিসি) সাজাহান সাজু।
তাসভীর কুড়িগ্রাম বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রিয় বিএনপির সদস্য। এফআর টাওয়ার পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্বও পালন করছিলেন তিনি।
ওই বিএনপি নেতা কাশেম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। এফআর টাওয়ারের ২১ থেকে ২৩তলা পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠানেরই অফিস রয়েছে।
জানা গেছে, বনানীর আগুনের হতাহতের ঘটনায় শনিবার মামলা হয়েছে। এজাহারে তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। উল্লেখিত তিন আসামি হলেন প্রকৌশলী ফারুক হোসেন, রূপায়ণ গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান মুকুল এবং তাসভীর উল ইসলাম।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বনানীর এফআর টাওয়ারে আগুন লাগে। এখন পর্যন্ত এ আগুনের ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৬ জন। আর আহতদের অনেকে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
এফআর টাওয়ারের জমির মূল মালিক ছিলেন এস এম এইচ আই ফারুক নামের একজন প্রকৌশলী। ওই জমিতে ২০০৫ সালে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করে রূপায়ন গ্রুপ। দুই বছর পর ভবনটি চালু হয়। ফলে এর নাম দেয়া হয় ফারুক-রূপায়ন টাওয়ার যা সংক্ষেপে এফআর টাওয়ার।
রূপায়ন পরে তাদের মালিকানায় থাকা বিভিন্ন ইউনিট বিক্রি করে দেয়। ২৩ তলা ওই ভবনের সবগুলো ইউনিটের মালিক এখন ফারুক ও তাসভীরসহ মোট ২৪ জন।
ব্যবসায়ী তাসভীর রাজনীতিতে আসেন ২০০৬ সালে। তিনি একাদশ সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-৩ আসনে (উলিপুর) বিএনপির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান।
তবে তার বড় ভাই প্রয়াত এ কে এম মাঈদুল ইসলাম বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ছিলেন। জিয়াউর রহমানের সরকারের মন্ত্রীও ছিলেন তিনি। পরে এরশাদের আমলেও মন্ত্রী হয়েছিলেন মাঈদুল। দশম সংসদেও জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন তিনি।
অগ্নিকান্ডের শিকার ভবনটিতে পর্যাপ্ত অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা না থাকা এবং নির্মাণ বিধিমালা অনুসরণ না করার দিকে ইঙ্গিত করেছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। তিনি সংবাদাদমাধ্যমকে বলেছেন, এফআর টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানি দুর্ঘটনা নয়, ‘হত্যাকাণ্ড’।
এইচএ/রাতদিন
উত্তরের মুখ