রংপুরের বদরগঞ্জের কালুপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিকের চালকল থেকে ১৯৭ বস্তা ভিজিএফের চাল জব্দ করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। প্রতি বস্তা ৩০ কেজি ওজনের এই চালের মোট পরিমান প্রায় ৬ হাজার কেজি।
সোমবার, ৩ জুন দিবাগত রাত দেড়টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নবীরুল ইসলামের নেতৃত্বে অভিযান শুরু হয়। পরে পৌরসভার কলেজিয়েট হাইস্কুলের পাশে অবস্থিত চেয়ারম্যানের মালিকানাধীন তছলিমা চালকলে অভিযান চালিয়ে ভিজিএফের বিপুল পরিমাণ এই চাল জব্দ করা হয়।
এ ঘটনায় বদরগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বাবুল চন্দ্র রায় বাদী হয়ে মঙ্গলবার বিকেলে ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল হক ও গোবিন্দ সরকারকে আসামি করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে বদরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ভিজিএফের ওই চালের মধ্যে ৫ হাজার ৯১০ কেজি চাল বিতরণ না করে তা কালোবাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে মজুত করে রাখা হয়েছিল।
বদরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম জানান, ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বদরগঞ্জ পৌরসভার থানাপাড়া গ্রামের চাল ব্যবসায়ী গোবিন্দ সরকারকে রাতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, ওই চালকলটি ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল হকের কাছে ভাড়া নিয়ে সেখানে মুড়ির ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন গোবিন্দ সরকার।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বাবুল চন্দ্র রায় জানান, পবিত্র ঈদুল ফিতর ও রমজান মাস উপলক্ষে কালুপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে ৪ হাজার ৬১৭ জন দুস্থ ও গরিব মানুষের মধ্যে বিতরণের জন্য ৬৯ টন ২৫৫ কেজি ভিজিএফের চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। গত শুক্র ও শনিবার ওই চাল বিতরণ শেষ করেন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল হক।
গ্রেপ্তার গোবিন্দ সরকার ভ্রাম্যমাণ আদালত ও পুলিশকে জানান, গত ৩১ মে রাত ৮টায় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল হক ট্রলিতে করে ভিজিএফের ওই চাল এনে চালকলের একটি কক্ষে মজুত করে রাখেন।
ইউএনও মো. নবীরুল ইসলাম জানান, ভিজিএফের চাল আত্মসাতের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেবে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিক বলেন, ‘চাল মজুত রাখার ঘটনায় ষড়যন্ত্র করে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’
বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান বলেন, পলাতক থাকায় চেয়ারম্যান শহিদুল হককে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তবে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
জেএম/রাতদিন