দিনাজপুরে ভাতার অনিয়মে চেয়ারম্যানের চেয়ার পোড়ালেন সদস্য

ভাতার কার্ডের দ্বন্দ্বের ঘটনায় দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় এক ইউপি চেয়ারম্যানের বসার চেয়ারসহ গুরুতপূর্ণ কাগজপত্র পুড়িয়ে দিয়েছেন এই ইউপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সিরাজুল ইসলাম।

শনিবার, ৩০ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলার কাটলা ইউনিয়নে এই ঘটনা ঘটে। ওই ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান নাজির হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দীর্ঘদিন থেকে পরিষদের বিভিন্ন প্রকার ভাতাসহ অনেক অনিয়ম করে আসছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান নাজির হোসেন। কয়েক দিন আগে বিধবা ভাতার কার্ডগুলো কবজায় নিয়ে নিজের পছন্দের ব্যক্তিদের প্রদান করছিলেন। ভাতার কার্ডগুলো পরিষদের কোনো সদস্যদের মনোনীত ব্যক্তিদের দেওয়া হচ্ছে না।
সিরাজুল ইসলাম, ইউপি সদস্য

ইউপি পরিষদের পাশের মোবাইল ব্যবসায়ী মুরাদ হোসেন জানান, শনিবার সকাল ১০টার দিকে ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম বাজারের ইউনিয়ন ভবনের ভেতর থেকে একটি চেয়ারসহ কিছু কাগজপত্র বের করে নিয়ে আসেন। পরে তিন মাথা মোড়ে সাজ্জাদ ডাক্তারের ওষুধের দোকানের সামনে নিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন।

জানতে চাইলে এ বিষয়ে চেয়ারম্যান নাজির হোসেন বলেন, শনিবার সকালে তথ্য সেবাকেন্দ্রের সাখাওয়াত হোসেনের মাধ্যমে জানতে পারি ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম কাটলা বাজারের পুরাতন ইউপি ভবনের ভেতর থেকে বসার চেয়ার এবং সচিবের ঘর থেকে রেজল্যুশন খাতাসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজ নিয়ে যান। পরে বাজারের গোডাউন মোড় তিনমাথা এলাকায় চেয়ারের ওপর কাগজ রেখে আগুন ধরিয়ে দেন।

চেয়ারম্যান বলেন, অফিসের চেয়ার ছাড়াও লাঠি দিয়ে টেবিলের কাঁচ ভেঙে ফেলেন ওই সদস্য। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আগুন দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে এবং অভিযোগ করে ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন থেকে পরিষদের বিভিন্ন প্রকার ভাতাসহ অনেক অনিয়ম করে আসছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান নাজির হোসেন। কয়েক দিন আগে বিধবা ভাতার কার্ডগুলো কবজায় নিয়ে নিজের পছন্দের ব্যক্তিদের প্রদান করছিলেন।

তিনি আরও বলেন, ভাতার কার্ডগুলো পরিষদের কোনো সদস্যদের মনোনীত ব্যক্তিদের দেওয়া হচ্ছে না। এমন অভিযোগে শনিবার সকালে ওই ভবন থেকে চেয়ার নিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছি।

বিরামপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান মনির বলেন, সকালে এমন খবরে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পোড়ানো চেয়ারটি উদ্ধার করে পরিষদে রাখা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পরিমল কুমার সরকার বলেন, আগুনের ঘটনায় থানার ওসিসহ ঘটনাস্থলে গিয়েছি। কী কারণে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে, বিষয়গুলো জানার জন্য পরিষদের সব সদস্যের উপজেলা পরিষদ অফিসকক্ষে ডাকা হয়েছে। বিস্তারিত জানার পরে বোঝা যাবে আসল ঘটনা কী।

এনএ/রাতদিন

মতামত দিন