তিস্তায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং

লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার, ১২ জুলাই রাত নয়টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপদসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নদী পাড়ের লোকজনকে নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিতে আজ রাত ১০টা থেকে দোয়ানী ও আশপাশের এলাকায় মাইকিং করতে দেখা গেছে।

এদিকে জেলার তিন উপজেলার নদী তীরবর্তি নিম্নাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার পরিবারের ২৬ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে সরকারি হিসাবে বলা হয়েছে। একটি এলাকায় বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। বাড়িঘরের পাশাপাশি ১৪ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর জানিয়েছেন, পানিবন্দি পরিবারগুলোর জন্য ১১০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আর পানি উপচে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া বাঁধ মেরামতে কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড(পাউবো)।

পাউবো জানায়, গত দুদিন থেকে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি ওঠানামা করছে। গত বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টায় ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ওই দিন রাতে বেড়ে বিপদসীমার ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছিল। তবে শুক্রবার সকাল ৬ টায় কিছুটা কমে বিপদসীমার ২৪ এবং সন্ধ্যা ছয়টায় বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে তিস্তার পানি প্রবাহিত হয়।

নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিতে মাইকিং। ভিডিও দেখতে প্লে-বাটনে ক্লিক করুন:
নদী তীরবর্তী মানুষকে নিরাপদে সরে যাওয়ার অনুরোধ করে প্রচারণা

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অব্যাহত ভারী বর্ষন ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদী তীরবর্তী নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী, সিংগীমারী, সির্ন্দুণা, পাটিকাপাড়া ও ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ও সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ও রাজপুর ইউনিয়নের সাড়ে ৬ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

শুক্রবার সকালে সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের পাঙ্গাটারী কালীরথান বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের উপর দিয়ে বন্যার পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। এতে করে পাঙ্গাটারী ও রথিপুর গ্রামের সাত শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে বলে গোকুন্ডা ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা স্বপন জানায়।

এদিকে আদিতমারী উপজেলার তিস্তাতীরবর্তি মহিষখোচা ইউনিয়নের দক্ষিন বালাটারী, বারঘরিয়া ও চন্ডিমারী গ্রামে বন্যার পানি ঢুকে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। এতে ওই এলাকার বেশকিছু পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

ইউপি চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক চৌধুরী গতকাল বিকালে জানান, তার ইউনিয়নের এক হাজার ২০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

এবি/রাতদিন