লালমনিরহাটের পাটগ্রাম পৌরসভার সাধারণ নির্বাচনে ভোটগ্রহনে দায়িত্বে থাকা দুই সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে কর্তব্যরত থাকা অবস্থায় শারীরিক ভাবে লাঞ্চিত ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার বিচার দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে লাঞ্চনার এই অভিযোগ আনা হয়। এসময় উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সাবরিনা লাকীর দায়িত্ব অবহেলার বিচারের দাবিও জানান হয়। যিনি ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন।
আজ মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে চারটার দিকে স্থানীয় পাটগ্রাম উপজেলা মোড়ে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এটি আয়োজন করে কৃষিবিদদের সংগঠন ডিপ্লোমা কৃষিবিদ ইনষ্টিটিউশন বাংলাদেশ (ডিকেআইবি)।
লাঞ্চিত ওই দুই সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা হলেন পাটগ্রাম উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহাদাৎ হোসেন ও মো. জালাল হোসেন।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন, ডিকেআইবির লালমনিরহাট জেলা শাখার সভাপতি লতিফুল বারী ও পাটগ্রাম উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জোহা খন্দকার।
লিখিত অভিযোগে সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার, ১৪ ফেব্রুয়ারি পাটগ্রাম পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্টিত হয়। এ নির্বাচনে সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে লাঞ্চনার শিকার ওই দুই কর্মকর্তা ভোট গ্রহণের দ্বায়িত্ব পালন করছিলেন। ভোট গ্রহণ শেষে প্রিজাইডিং অফিসার কর্তৃক নির্ধারিত ভোট গণনা কক্ষে ভোট গণনার প্রস্ততি গ্রহণের সময় কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান তাদেরকে ডেকে পাশের কক্ষে নিয়ে যান এবং সেখানে অপেক্ষ করতে বলেন ।
কিছুক্ষণ পরে তিনি কক্ষে প্রবেশ করে কোন কিছু জিজ্ঞেস না করেই ওই দু’জনকে নিজ হাতে এলোপাতাড়ি বেধড়ক মারপিট শুরু করেন। মারপিটের এক পর্যায়ে লাঠি ভেঙ্গে যাওয়ায় বাইরে অবস্থানরত বিজিবি সদস্যের হাত থেকে আরও একটি লাঠি নিয়ে আবারও এলোপাতাড়ি বেধড়ক মারপিট করেন।
এরপর বিজিবি সদস্যকে পুনরায় মারপিটের নির্দেশ দেন এবং এই মারপিটের কথা বাহিরে প্রকাশ করলে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে কক্ষ ত্যাগ করেন। তাঁর নির্দেশনামতে বিজিবি সদস্যরাও তাদেরকে মারপিট করেন এবং কক্ষে আটকিয়ে রাখেন।
পরবর্তীতে আনুমানিক রাত সাতটার দিকে ভোট গণনা ও কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষনা শেষে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকল সদস্য কেন্দ্র ত্যাগ করার পরে কেন্দ্র ত্যাগের নির্দেশ পাবারা পর অসুস্থ অবস্থায় ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন ওই দুই কর্মকর্তা।
পরবর্তীতে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন তারা।
এ বিষয়ে জানতে ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার পাটগ্রাম উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সাবরিনা লাকীর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নিবাহী এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট মাহমুদুল হাসান বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন ওই কেন্দ্রে এ ধরণের কোন ঘটনা ঘটেনি। তাঁরা এতো দিন পর উদ্দোশ্যমূলক ভাবে অভিযোগ করেছে। ওই দিন তো সাংবাদিক, পোলিং এজেন্টসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা অনেকেই ছিলো তারা কেউই এ বিষয়ে জানলো না । তারা তো সেই দিনই অভিযোগ করতে পারতো। তারা সেদিন কেন অভিযোগ করলো না সে বিষয়ে তাদের জিজ্ঞেস করেন।
বিষয়টি নিয়ে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার ও পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে বিচার চেয়ে আবেদন করেছেন ভুক্তভোগীরা।