বাংলাদেশের এসকেএফ বিশ্বে প্রথম, করোনার ওষুধ রেমডিসিভির বাজারে

করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় বাংলাদেশেও ব্যবহৃত হবে মার্কিন কোম্পানি গিলিয়েড সায়েন্সেস উদ্ভাবিত ওষুধ রেমডিসিভির। ইতোমধ্যে উৎপাদন সম্পন্ন করেছে দেশের ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড। উৎপাদনের সব প্রক্রিয়া শেষ করার পর আজ শুক্রবার, ৮ মে সকাল থেকে শুরু হয়েছে বাজারজাতের প্রস্তুতি।

এসকেএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সিমিন হোসেন গণমাধ্বযমকে লেন, ‘করোনা পরিস্থিতি নিয়ে দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে আমরা দেশবাসীকে এই সুখবর দিতে চাই যে বিশ্বে করোনার একমাত্র কার্যকর ওষুধ বলে স্বীকৃত জেনেরিক রেমডেসিভির উৎপাদনের সব ধাপ আমরা সম্পন্ন করেছি।’

করোনা রোগীদের চিকিৎসায় মার্কিন প্রতিষ্ঠান গিলিয়েড সায়েন্সেস কোম্পানির তৈরি এই ওষুধ সারা বিশ্বে সাড়া ফেলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) গত সপ্তাহে করোনার ওষুধ হিসেবে রেমডেসিভিরকে ব্যবহারের অনুমোদন দেয়। জাপানের ওষুধ প্রশাসন ৭ মে থেকে ওষুধটি করোনা রোগীদের ওপর প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছে। তবে কবে নাগাদ জাপান এর উৎপাদনে যাবে তা এখনো ঠিক হয়নি বলে সে দেশের একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন।

মার্কিন প্রতিষ্ঠান গিলিয়েড সায়েন্সেস ওষুধটি উৎপাদনের জন্য ভারত ও পাকিস্তানের বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করছে বলেও খবরে জানা গেছে। এ অবস্থায় এসকেএফই বিশ্বে প্রথম ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান, যারা জেনেরিক (মূল/গোত্র) রেমডেসিভির উৎপাদন করতে সক্ষম হলো। এসকেএফের উৎপাদন করা রেমডেসিভিরের বাণিজ্যিক নাম ‘রেমিভির’।

এ সম্পর্কিত আরও খবর...
style="display:block; text-align:center;" data-ad-layout="in-article" data-ad-format="fluid" data-ad-client="ca-pub-3929264565086846" data-ad-slot="3647344972">

সিমিন হোসেন বলেন, ‘ওষুধ প্রশাসন গত মার্চ মাসে ওষুধটি ব্যবহারের অনুমতি দেয়। ওষুধ প্রশাসনের অনুমোদনের পরপরই আমাদের ফর্মুলেশন বিজ্ঞানীরা মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে রেমডেসিভির নিয়ে কাজ শুরু করেন। যেহেতু এটি একটি শিরায় দেওয়া ইনজেকশন, সে কারণে এর উৎপাদনে সূক্ষ্ম প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। দুই মাস ধরে এসকেএফ কর্মীদের নিরলস পরিশ্রমের ফলেই এত কম সময়ে এটা উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে।’

কোভিড-১৯ রোগের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি কার্যকারিতা দেখিয়েছে রেমডেসিভির। গিলিয়েড-এর নিজস্ব পরীক্ষায় দেখা গেছে, এই ওষুধ ব্যবহারে রোগীদের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। মানুষের শিরায় ইনজেকশন হিসেবে এই ওষুধ প্রয়োগ করতে হয়। রোগের তীব্রতার ওপর এর ডোজ নির্ভর করে। গুরুতর অসুস্থ রোগীদের জন্য ৫ অথবা ১০ দিনের ডোজ প্রয়োজন হতে পারে।

রেমডেসিভির উৎপাদনের একচেটিয়া স্বত্ব রয়েছে গিলিয়েডের। তবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আইন অনুযায়ী, জাতিসংঘ স্বীকৃত বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশগুলো এসব পেটেন্ট বা স্বত্ব অগ্রাহ্য করতে পারে। ফলে এসব দেশ সহনীয় মূল্যে ওষুধ উৎপাদন করতে পারে। তবে এই ওষুধটি বর্তমানে খোলা বাজারে দেওয়া হবে না। এটা করোনা চিকিৎসার জন্য সরকার অনুমোদিত হাসপাতাল বা ক্লিনিককে দেয়া হবে।

এবি/রাতদিন