বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে বঙ্গবন্ধুর হাজার ছবি সম্বলিত দীর্ঘতম ব্যানার

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এক হাজার ছবি সম্বলিত এক হাজার ফুট দীর্ঘ ব্যানার। এই ব্যানারটি ঝোলানো হয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে।

টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে বিশাল এই আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে কক্সবাজারের রামু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

তাদের এই ব্যতিক্রমী আয়োজন পর্যটকসহ স্থানীয়দের কাছে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। মুজিববর্ষ উপলক্ষে বুধবার কক্সবাজারের হিমছড়ি সমুদ্রসৈকতে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন ফিতা কেটে শিক্ষার্থীদের এই প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রামু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রণয় চাকমা, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জয়নাল আবেদীনসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জয়নাল আবেদীন জানান, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষ উপলক্ষে বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা টিফিনের টাকা জমা করে এ মহৎ উদ্যোগটি বাস্তবায়ন করেছে। তিনি বলেন, এক হাজার ফুট দীর্ঘ একটি কাপড়ের ব্যানারে ঝোলানো হয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর এক হাজার ছবি।

এমন ব্যতিক্রমী প্রদর্শনী কক্সবাজার জেলায় এই প্রথম। তিনি বলেন, এ উদ্যোগের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হবে। তাদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রত হবে।

বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী মালিহা জানায়, কয়েকজন শিক্ষকের সহায়তায় শিক্ষার্থীরা টিফিনের টাকা জমিয়ে বঙ্গবন্ধুর জীবনের বিভিন্ন চিত্রকর্ম সংগ্রহ করে। অল্পদিনে তারা সংগ্রহ করে বঙ্গবন্ধুর এক হাজার চিত্র।

পরে এসব ছবি দিয়ে এক হাজার ফুট দীর্ঘ এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। অপর এক শিক্ষার্থী রুহি বলে, ‘এই প্রদর্শনী করতে পেরে আমরা গৌরব বোধ করছি। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে শিক্ষা অর্জন করতে পারবে।’

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রণয় চাকমা বলেন, ‘টিফিনের টাকা দিয়ে শিক্ষার্থীদের এমন একটি উদ্যোগ বিরল ঘটনা। এই আয়োজন অন্যদের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’

তিনি বলেন, মাধ্যমিক পর্যায়ের একটি স্কুলের শিক্ষার্থীরা টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আলোকচিত্র প্রদর্শনী করেছে। এর জন্য স্থান বেছে নিয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতকে। এই দৃশ্য দেখতে যেমন মনোমুগ্ধকর ছিল, তেমনি পর্যটকদের জন্য ছিল বাড়তি আকর্ষণ। হাজার হাজার পর্যটক এই প্রদর্শনী উপভোগ করেছেন।

ইউএনও আরও জানান, ছাত্রীদের টিফিনের টাকা আর নিজেদের শ্রমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চিত্রপ্রদর্শনী সর্বত্র সাড়া জাগিয়েছে। এ প্রদর্শনী দেখে সর্বস্তরের মানুষের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরাও বঙ্গবন্ধুর জীবনের শুরু থেকে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অজানা অধ্যায় জানার সুযোগ পেয়েছে।

প্রদর্শনীর সমন্বয়কারী ও সহকারী শিক্ষক সুমথ বড়ূয়া জানান, বঙ্গবন্ধুর জীবনী নিয়ে এত বড় চিত্রপ্রদর্শনী এর আগে আর হয়নি। জাতির পিতাকে নিয়ে দীর্ঘতম ব্যানারটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। প্রদর্শনী শেষে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ এই ব্যানারসহ হেঁটে সৈকত প্রদক্ষিণ করে। (সৌজন্যে: সমকাল)

এসকে/রাতদিন