রংপুরে অস্ত্রের লাইসেন্স কেলেংকারী: জামিন নামঞ্জুর ৬০ আসামীর

রংপুরে জেলা প্রশাসকের সই জালসহ ভূয়া কাগজপত্র তৈরির পর করে ৪০০ অস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান ও নবায়নের আলোচিত ঘটনায় চার্জশিটভূক্ত ৬০ অস্ত্রের লাইসেন্সগ্রহনকারীর জামিন না মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল রংপুর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পন করে তারা জামিন আবেদন করেছিলেন।

রংপুর আদালতের সিএসআই রেজাউল করিম রেজা জানান, আইনজীবিদের মাধ্যমে দুপুরে চাঞ্চল্যকর এই মামলায় রংপুর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করেন দেশের বিভিন্ন এলাকার ৬০ ব্যক্তি। আদালতের বিচারক রাশেদা সুলতানা শুনানী শেষে তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, ওই ৬০ জন হাইকোর্ট থেকে অন্তর্বর্তিকালীন জামিনে ছিলেন। তাদের প্রায় সকলেই অবসরপ্রাপ্ত সেনাবাহিনী ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা।

রংপুর জজ আদালাতের পিপি আব্দুল মালেক জানান, রংপুর ডিসি অফিসের অফিস সহকারী সামসুল ইসলামসহ অন্য আসামীরা বেসরকারী আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স সংক্রান্ত সঠিক হিসাব গোপন করে, আগ্নেয়াস্ত্রের রেজিষ্টার গরমিল, অবৈধভাবে লাইসেন্স প্রস্তুত, অস্ত্র রাখার যোগ্যতাসম্পন্ন নয় এমন ব্যক্তিদের লাইসেন্স সরবরাহ করা হয়।

এ ঘটনায় ২০১৭ সালের ১৮ মে অফিস সহকারী সামসুল ইসলামসহ দুজনের নামে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মিন্টু বিশ্বাস বাদি হয়ে অস্ত্র আইন এবং সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার বিষয়ক আইনে দুটি পৃথক মামলা করেন। অপরদিকে অবৈধ অর্থ উপার্জনে পৃথক মামলা হয় দুদকে।

ভূয়া লাইসেন্স, নগদ টাকা, সঞ্চয়পত্র জব্দ

মামলা দায়েরের পর পরই অফিসে অভিযান চালিয়ে সামসুলের আলমিরা থেকে ১৫টি ভূয়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স, ১৫ টি ভূয়া লাইসেন্সের ভলিউম, ৭ লাখ নগদ টাকা, ১১ লাখ টাকার এফডিআর ও ২ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় ওই দিনই ডিসি অফিসের জিএম শাখার সকল কাগজপত্র তাৎক্ষণিকভাবে সিলগালা করে দেয় জেলা প্রশাসন এবং অভিযুক্ত অফিস সহকারী সামসুল আলম ও পিয়ন পিন্টুকে বরখাস্ত করা হয়। তবে সেসময় পালিয়ে যায় সামসুল।

পরে ওই বছর ৫ জুলাই রাতে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকা থেকে র‌্যাবের একটি দল সামসুল আলমকে গ্রেপ্তার করে। ১৩ জুলাই রংপুর কোতয়ালী থানায় তার নামে অস্ত্র আইনে মামলা অপর একটি মামলা হয়।

এ ঘটনায় ২৮১ জনের নামে চার্জশিট দেয়া পুলিশ। এরপর ভুয়া লাইসেন্স দেয়া অস্ত্রগুলো উদ্ধারের কাজ শুরু করে দুদক। ওই বছর চার দফায় ৫৫ টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৬১৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। এসব অস্ত্র রাজশাহী, দিনাজপুর ও ঢাকা থেকে কেনা হয়েছে এবং অধিকাংশই তুরস্কের। অস্ত্র ও গুলি ছাড়াও তাদের কাছে থাকা লাইসেন্সের কপিসহ অস্ত্র কেনার কাগজপত্রও জব্দ করা হয়েছে।

এইচএ/রাতদিন