রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার কৃষি অফিসের অধীন মিঠাপুর ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা পদে কর্মরত রয়েছেন একই উপজেলার হয়বতপুর গ্রামের মো. তোজাম্মেল হোসেনের ছেলে মো. শরিফুল ইসলাম। তার প্রকৃত নানা একই উপজেলার হয়বতপুর গ্রামের মৃত সাদত উল্লা।
অথচ প্রকৃত নানার নাম গোপন রেখে শরিফুল ইসলাম গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার কামালের পাড়া ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মো. সোলেমান আলীকে ভুয়া নানা বানিয়ে পোষ্য কোটায় চাকরি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
তার নিয়োগ সংক্রান্ত কাগজপত্র পর্যালোচনায় জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধা সোলেমান আলীর ওয়ারিশ সার্টিফিকেটে উপসহকারী কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলামের মাতা মোছা. ছকিনা বেগম নামে তার কোনো ওয়ারিশ বা মেয়ে সন্তান নেই।
অপরদিকে মিঠাপুকুর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. নুরুল আমিন প্রধান স্বাক্ষরিত মৃত সাদত উল্লার ওয়ারিশ সার্টিফিকেটে দেখা যায়, ওই উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলামের মাতার নাম মোছা. ছকিনা বেগমের নাম উল্লেখ রয়েছে। তবে ভুয়া পোষ্য কোটায় প্রায় ৭ বছর ধরে চাকরি করছেন রংপুর মো. শরিফুল ইসলাম।
অভিযোগ রয়েছে, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ২০১২ সালের ১৯ নভেম্বর ‘দৈনিক সংবাদ’ পত্রিকায় ৭৩৬ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।
এরপর ২০১৩ সালের ২৫ জুলাই কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মো. সেকেন্দার আলী স্বাক্ষরিত নিয়োগপত্রে ১০৬ জনকে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা পদে নিয়োগপত্র দেয়া হয। নিয়োগপত্রের ১২নম্বর ক্রমিকে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা পদে মো. শরিফুল ইসলামকে ‘মুক্তিযোদ্ধা নাতি’ পোষ্য কোটায় নিয়োগ দেয়া হয়। নিয়োগপত্র পেয়ে ১৪ আগস্ট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর রংপুর অঞ্চলে চাকরিতে যোগদান করেন শরিফুল।
জানা গেছে, বর্তমানে পীরগঞ্জ উপজেলার কৃষি অফিসের অধীনে মিঠাপুর ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা পদে মো. শরিফুল ইসলাম চাকুরীরত রয়েছেন।
সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হয়, শরিফুল ইসলামের সাবেক স্ত্রী মোছা. মরিয়ম বেগমের একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে। লালমনিরহাট পৌরশহরের খোর্দ্দসাপটানা (বসিরটারী) গ্রামের আবদুল মজিদের মেয়ে মরিয়ম তার একটি আবেদনে দুদক, মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক মন্ত্রী, কৃষি মন্ত্রণালয়সহ বেশ কয়েক জায়গায় বিষয়টি তুলে ধরেন।
জানতে চাইলে শরিফুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, ওই উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার চাকরি আমার সময় হয়নি। বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এইচএ/রাতদিন