রংপুর বিভাগে আঘাত হানতে পারে ‘ফণী’: প্রতিমন্ত্রী

প্রচণ্ড শক্তি সঞ্চয় করে হ্যারিকেনের গতিসম্পন্ন ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়া ‘ফণী’ আগামী শনিবার, ৪ মে বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এর আগে শুক্রবার সেটা আঘাত হানার সম্ভাবনা আছে ভারতের উড়িষা উপকূলে। দেশটিতে আঘাতের পর খানিকটা দুর্বল হয়ে বাংলাদেশের খুলনা-সাতক্ষীরা উপকূল দিয়ে প্রবেশ করে রংপুর-দিনাজপুরের দিকে আঘাত হানতে পারে।

বুধবার, ১ মে সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় ফণী মোকাবিলায় প্রস্তুতি সভা শেষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা, রংপুর হয়ে দিনাজপুরের দিকে যেতে পারে। সেইসঙ্গে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম উপকূলেও আঘাত হানতে পারে। আগামী ৪ মে সকাল নাগাদ এ ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানতে পারে বাংলাদেশে।

এসময় তিনি বলেন, এই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।

ডা. এনামুর রহমান বলেন, ‘আমরা আশা করছি, ঘূর্ণিঝড়টির বর্তমান যে গতিপথ, সেই পথে এগিয়ে যেতে থাকলে এটি প্রথমে ভারতের উড়িষায় আঘাত করবে, এরপর পশ্চিমবঙ্গে আঘাত করবে। এরপর দুর্বল হয়ে বাংলাদেশের খুলনা অঞ্চল হয়ে সাতক্ষীরা অঞ্চলে আঘাত করবে। আর যদি ঘূর্ণিঝড়টি দিক পরিবর্তন করে বাংলাদেশের দিকে আসে, তাহলে খুলনা, মোংলা, সাতক্ষীরা, চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার উপকূল পর্যন্ত এলাকায় ছড়িয়ে পড়বে।’

মোকাবিলায় প্রস্তুতি

ফণীর আঘাত মোকাবিলায় সরকার সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে বলে সভা শেষে সাংবাদিকদের জানান প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান। তিনি বলেন, আমরা এরই মধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে কন্ট্রোল রুম খুলেছি। জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান কেন্দ্র (এনডিআরসি) প্রতিনিয়ত খবর দিয়ে যাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) সদর দফতর ও উপকূলীয় ১৯টি জেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।

ফণীর সম্ভাব্য ক্ষতি মোকাবিলায় গৃহীত পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্বেচ্ছাসেবীরা বিভিন্ন এলাকায় এরই মধ্যে মাইকিং করে প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু করেছেন। যেসব জেলায় ফণী আঘাত করতে পারে, সেসব জেলায় প্রশাসকদের কাছে ২০০ টন চাল পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি জেলায় জেলা প্রশাসককে ৫ লাখ করে টাকাও দেওয়া আছে। একইসঙ্গে ৪১ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। স্যালাইনের জন্য সুপেয় পানির ট্রাক পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

বৈঠকে আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক মো. সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ফণীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে সরাসরি বাংলাদেশে আঘাত হানলে তা হবে ভয়াবহ। এটি বর্তমানে গভীর সমুদ্রে বাংলাদেশ থেকে একহাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।

এবি/রাতদিন