সৈয়দপুর পৌর নির্বাচন: সহিংসতায় নিহত এক, চার প্রার্থীর ভোট বর্জন

নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভা নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত এবং দুই জন আহত হয়েছেন। নিহতের নাম ছোটন অধিকারী (৫২)। আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। পুলিশ হাতাহাতির বিষয়টি নিশ্চিত করলেও মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।

রোববার, ২৮ ফেব্রুয়ারি দেশে পঞ্চম দফায় অনুষ্ঠিত সৈয়দপুর পৌরসভা নির্বাচনে এই ভোট বর্জন ও নিহতের ঘটনা ঘটে।

নিহত ছোটন অধিকারী সৈয়দপুর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী নজরুল ইসলাম রয়েলের সমর্থক। পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মুন্সিপাড়া সৈয়দপুর মহিলা কলেজ কেন্দ্রের বাইরে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে।

আহত হয়েছেন সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আজম আলী সরকার (৪৫) ও আওয়ামী লীগ সমর্থক সবুজ (৩০)।

এদিকে, পৌর নির্বাচনে ভোট গ্রহনের ব্যাপক অনিয়ম, বুথ থেকে পোলিং এজেন্টদের মারপিট করে বের করে দেওয়া, সাধারণ ভোটারদের ভোট দিতে বাঁধা প্রদান এবং প্রশাসনের পক্ষপাত্বিতের অভিযোগে নির্বাচন বর্জন করেন জাতীয় পার্টি (এ) এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর মেয়র প্রার্থী। ভোট বর্জনকারী মেয়র প্রার্থীরা হচ্ছেন জাপা (এ) মেয়র প্রার্থী আলহজ্ব মো. সিদ্দিকুল আলম ও ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী হাফেজ মো. নূরুল হুদা।

জাপা (এ) প্রার্থী সিদ্দিকুল আলম দুপুরে শহরের বিমানবন্দর সড়কে তাঁর প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বর্জনের ওই ঘোষণা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে সিদ্দিকুল আলম অভিযোগ করে বলেন, শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের হিন্দু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে তাঁর উপস্থিতিতে পোলিং এজেন্ট সুমনা আলমকে বুথ থেকে জোর করে বের করে দেওয়া হয়। এ সময় তিনি এর প্রতিবাদ করলে তাকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদর্শন করা হয়েছে। এ ঘটনাটি কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারকে জানানো হলেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এাছাড়াও ওই ওয়ার্ডের শহীদ জিয়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে একজন পুলিশ কর্মকর্তা তাঁর লাঙ্গল মার্কার সমর্থক নারী ভোটারদের গায়ে হাত তোলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জাপা (এ) মেয়র পদপ্রার্থী সিদ্দিকুল আলম সিদ্দিক পুর্ননির্বাচনের দাবি জানান।

ভোট অনিয়মের একই অভিযোগে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর মেয়র প্রার্থী হাফেজ মো. নূরুল হুদাও ভোট বর্জন করেছেন।

অপরদিকে, সৈয়দপুর পৌরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ৫ কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে চারজনই নির্বাচন বর্জনের ঘোষনা দেন। ভোট গ্রহনে অনিয়মের অভিযোগে বর্জনের ওই ঘোষনা দেন তারা।

সকাল ৮টা থেকে সৈয়দপুর পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ডে ৪১টি ভোট কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয়। সকাল থেকে ভোট কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের ব্যাপক উপস্থিত লক্ষ্য করা যায়। দুপুরে পর থেকে কয়েকটি ভোট কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটে।

জানতে চাইলে সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবুল হাসনাত খান নির্বাচনে কোথাও কোন রকম সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। তবে পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মুন্সিপাড়ায় কাউন্সিলর প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে হাতাতাতি হলেও এতে মৃত্যুর কোন ঘটনা ঘটেনি।

জেএম/রাতদিন

মতামত দিন