দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে সাপের কামড়ে মৃত এক শিশুকে জীবিত ভেবে ওঝা ডেকে ঝাড়-ফুক শুরু করে পরিবারের লোকজন। মৃত্যুর পর স্থানীয়দের পরামর্শে লাশ নিয়ে ওঝার বাড়িতে দৌড়-ঝাঁপ ও ঝাড়-ফুঁকের খবর পাওয়া গেছে ।
শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি শিশু রিদনীরকে
দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের রাজেনুর রহমান রাজুর একমাত্র সন্তান রিদনীর । নবাবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ বিদ্যানিকেতনের প্রথম শ্রেণিতে পড়তো সে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শনিবার সন্ধ্যায় বাবা-মা বাড়িতে না থাকায় গোয়ালঘরে গরুকে খাবার দিতে যায় রিদনীর। এ সময় তার পায়ে বিষাক্ত কিছু একটা কামড় দিয়েছে বলে চিৎকার করে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে সে।
প্রতিবেশীরা এসে তাকে উদ্ধার করে। তার বাবা রাজেনুর রহমান রাজুকে মোবাইল ফোনে খবর দেয়া হয়। এর পর তাকে নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক অবস্থার অবনতি দেখে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন।
দ্রুত তাকে রমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসক রিদনীরকে মৃত ঘোষণা করেন। রাতেই তার লাশ বাড়িতে আনা হয়।
তারা জানান, রোববার, ২৫ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টার সময় গোসল করানোর সময় লাশ একটু নড়ে উঠে। এই অবস্থায় স্থানীয়দের পরামর্শে ছেলেকে বাঁচানোর চেষ্টায় লাশ নিয়ে যাওয়া হয় নবাবগঞ্জ উপজেলার খয়েরবাড়ি এলাকায় এক ওঝার বাড়িতে। কিন্তু সেই ওঝা জানান, সে মারা গেছে, আর কোনো উপায় নেই।
এরপর লাশ বাড়িতে এনে শেষ চেষ্টা হিসেবে আবার অন্য ওঝা ডেকে ঝাঁড়-ফুক চালানো হয়। এভাবে একাধিক চেষ্টার পর সব ওঝা বিফল হলে রোববার বাদ জোহর স্থানীয় গোরস্থানে রিদনীরের লাশ দাফন করা হয়।
তার মৃত্যুতে পুরো গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে । যদিও মৃত শিশুর নড়ে ওঠা নিয়ে এলাকায় এখনো গুঞ্জন রয়েছে।
জেএম/রাতদিন