পাটগ্রাম প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে তীব্র জনবল সংকট, বিপর্যস্থ চিকিৎসা সেবা

পাটগ্রাম উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে জনবল সংকটের কারণে এখানকার মানুষ প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের বিভিন্ন সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। উপরন্তু কর্মস্থলে ডাক্তার না থাকায় কাংখিত সেবা নিতে পাচ্ছে না খামারীরাও।

উপজেলার জন্য অনুমোদিত ডাক্তার পদ দুটি। একটি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও অন্যটি উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন। দুজনই কর্মস্থলে না থাকায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে প্রাণি চিকিৎসা সেবা। নিয়মিত ডাক্তার না থাকায় বর্তমানে ২ জন ভেটেরিনারি ফিল্ড এসিসটেন্ড (ভি.এফ.এ) ও ১ জন অফিস সহায়ক (এম.এল.এস.এস) দিয়ে চলছে নামমাত্র চিকিৎসা সেবা।

পাটগ্রাম উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় মোট প্রাণির সংখ্যা: গরু ১ লাখ ৮৮ হাজার ৬ শত ৭৮ টি , মহিষ ১৭৫ টি, ছাগল  ৮১ হাজার ৪শত ৭৭টি, ভেড়া ১৫ হাজার ৩ শত ২৮ টি, এ ছাড়াও রয়েছে ছোট- বড় অনেক মুরগির খামার। এ এলাকায় দিন-দিন প্রাণি পালন পেশা জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। প্রাণি পালনেও পিছিয়ে নেই এলাকাটি। এসব পশু, পাখির চিকিৎসার জন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীর মিলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের অনুমোদিত পদ রয়েছে ১১ টি । এর মধ্যে ৬ টি পদই শূন্য।

বর্তমান কার্যালয়ে পদ শূন্য রয়েছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ইউ.এল.ও)১জন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ সহকারী( ইউ.এল.এ) ১জন , ভেটেরিনারি কম্পাউন্ডার ১জন , ভেটেরিনারি ফিল্ড এসিসটেন্ড (ভি.এভ.এ) ১ জন, অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার ১জন, ড্রেসার ১জন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ইউ.এল.ও) ডা: মো. শামছুজ্জামান চলতি বছরের ১৫ মে পীরগাছা উপজেলায় বদলি হয়। তখন থেকে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন (ভি.এস) ডা:শ্যামল চন্দ্র রায়। তিনি বর্তমানে তিনিও ৬ মাসের জন্য ফাউন্ডেশন ট্রেনিংয়ে রয়েছেন।

এছাড়াও দুই (২) বছরের ফাউন্ডেশন ট্রেনিংয়ে রয়েছে  এফএ (এ আই) (প্রাণি কৃত্রিম প্রজনন কর্মী) মো. নবিউল হক।

এ বিষয়ে জোংড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা আহসান হাবীব বলেন, গত দুইদিন আগে ছাগল নিয়ে এসে ছিলাম উপজেলার প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে। কিন্তু এসে শুনি যে ডাক্তার নেই, পরে কর্মরত একজন ছাগলটির চিকিৎসা দিল। কিন্তু চিকিৎসা দেওয়ার পর ভালোতো হলোই না আরো রোগ বেড়ে গেছে। এজন্য আজকে আরো এসেছি।

পাটগ্রাম ইউনিয়নের রহমতপুর গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, ডাক্তারের দেখা করার জন্য এসেছি কিন্তু ডাক্তার না থাকায় পরামর্শ নিতে পারি নাই। প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে ডাক্তার যদি না থাকে তাহলে আমরা গরু, ছাগল পালনের জন্য বিভিন্ন বিষয়ে ভালো পরামর্শ কার কাছে নেব?

এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ডি.এল.ও) মো.সাইদুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যে ওখানে প্রকল্পের মাধ্যমে ১ জন চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আশা করি খুব শ্রীঘ্রই শূন্য পদে লোক নিয়োগ দিয়ে পদ পূরণ করা হবে।

এনএইচ/রাতদিন