মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত হত্যা মামলায় অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা, আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিন ও কাউন্সিলর মাকসুদসহ ১৬ জনের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এই ১৬ জনকে দায়ী করে ৭২২ পৃষ্ঠার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) চূড়ান্ত করা হয়েছে। বুধবার, ২৯ মে তা আদালতে দাখিল করা হতে পারে।
মঙ্গলবার, ২৮ মে রাজধানীর উত্তরায় পিবিআই কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এ সময় বলা হয়, নুসরাত হত্যা মামলার চার্জশিট চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় ১৬ জনের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলেছে। সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশ না নিলেও হত্যার মূল দায় অধ্যক্ষ সিরাজের।
মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআইর সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, নুসরাত হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ১২ আসামি দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। এর মধ্যে মাদ্রাসা অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাও রয়েছেন। অভিযুক্ত ১৬ জনেরই মৃত্যুদন্ড চেয়েছে পিবিআই।
এদিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন সাইবার ট্রাইব্যুনাল। তদন্তে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির জবানবন্দি ইন্টারনেটে ছড়ানোর ‘প্রমাণ’ পাওয়ায় সোমবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আস সামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন। এর আগে রোববার তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার কথা জানায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
প্রসঙ্গত ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় যান নুসরাত জাহান রাফি। বোরকা পরিহিত কয়েকজন কৌশলে তাকে ছাদে ডেকে নিয়ে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে করা শ্লীলতাহানির মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়। অস্বীকৃতি জানালে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
এ ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা, পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলমসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন রাফির বড়ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান। ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান অগ্নিদগ্ধ রাফি।
এর আগে ২৭ মার্চ রাফিকে নিজ কক্ষে নিয়ে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পর দিন তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এইচএ/রাতদিন