রংপুর ক্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক লাইব্রেরিয়ান মো. সহিদুন্নবী জুয়েলকে (৫০) পিটিয়ে-পুড়িয়ে হত্যা মামলার প্রধান আসামী আবুল হোসেনসহ নতুন করে আরও ৫জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে মোট ২৮ জন গ্রেফতার হলেন।
রোববার, ৮ নভেম্বর সকালে পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত(ওসি) সুমন কুমার মোহন্ত বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আটকদের মধ্যে ৪ জনকে লালমনিরহাটের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে রাজধানীর ভাটারা থানা কুড়িল বিশ্বরোড থেকে প্রধান আসামী আবুলকে গ্রেফতার করা হয়। এই আবুল হোসেনই প্রথম জুয়েলকে শারীরিক নিযার্তন করেন। ঘটনার পর দিন থেকেই আত্নগোপনে ছিল আবুল হোসেন। নিজের পরিচয় লুকাতে তার মুখে থাকা দাড়িও কেটে ফেলে সে। আগে গোঁফ না থাকলেও দাড়ি কেটে গোঁফ রেখেছে সে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে।
ওসি আরো জানান, দুপরের মধ্যে মামলার প্রধান আসামী আবুল হোসেন ঢাকা থেকে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থানায় নিয়ে আসা হবে। সেখানে তাকে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কর্মকর্তারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। পরে সোমবার সকালে আদালতে পাঠানো হবে।
আদালত পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মুসা আলম জানান, শহীদুন্নবী জুয়েলকে হত্যা ও মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় বুড়িমারী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খাদেমসহ ৯ জনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে খাদেমসহ ২ জন দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। এর আগে রিমান্ড ছাড়াই একজন দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় ৯ আসামির রিমান্ড শেষে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) সুমন কুমার মোহন্ত জানান, মামলার প্রধান আসামী আবুল হোসেনসহ নতুন করে আরও ৫জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে মোট গ্রেফতার হলেন ২৮ জন। তবে পুলিশের সারাশি অভিযান অব্যহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে যাকে পিটিয়ে হত্যার পর পেট্রোল দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। সেই সহিদুন্নবী জুয়েল বুড়িমারীতে গিয়েছিলেন ওষুধ কিনতে।
নিহত সহিদুন্নবী জুয়েল রংপুর শহরের শালবন মিস্ত্রীপাড়া এলাকার আব্দুল ওয়াজেদ মিয়ার ছেলে। তিনি রংপুর ক্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক গ্রন্থাগারিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র। গত বছর চাকরিচ্যুত হওয়ায় মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন তিনি।