ভূয়া এনজিও খুলে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে সৈয়দপুরে গ্রেপ্তার ১

নীলফামারীর সৈয়দপুরে ভূয়া এনজিও খুলে চাকুরিপ্রত্যাশী বেকার যুবকের পৌণে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। সৈয়দপুর থানায় ওই মামলাটি দায়ের করা হয়।

শুক্রবার , ৯ আগষ্ট দুপুরে সৈয়দপুর থানায় ওই মামলাটি দায়ের করেনমো. সানোয়ার হোসেন ওরফে সজীব। সজীব এস. আই. ট্রাষ্ট নামের ওই ভূয়া এনজিওতে কম্পিউটার অপারেটর নিয়োগ পেয়েছিলেন।

মামলায় দুইজনকে আসামী করা হয়। আসামীরা হচ্ছে, রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের নায়েব আলীর ছেলে মো. হয়রত বেলাল ওরফে শরিফ (২৫) এবং একই উপজেলার ইকরচালী মন্ডলপাড়ার মৃত. খবির উদ্দিনের ছেলে মো. তানভীর মন্ডল ওরফে মিশন (৩৫)। এদের মধ্যে মামলার এক নম্বর আসামী মো. হযরত বেলাল ওরফে শরিফকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

 মামলার আরজি সূত্রে জানা গেছে, মামলার আসামীরা এস. আই ট্রাষ্ট নামের একটি ভুয়া এনজিও খুলে। শহরের আসমতিয়া মাদ্রাসার কাছেভবন ভাড়ায় নিয়ে গত ২৯ মে দৈনিক খোলা কাগজ পত্রিকায় একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এতে ওই প্রতিষ্ঠানের জন্য শাখা ব্যবস্থাপক পদে ২০, ফিল্ড অফিসার পদে ১০০ জন এবংঅফিস সহকারি পদে ২০ জন নিয়োগের  জন্য আবেদনপত্র আহবান করা হয়।

এতে অনেকেই চাকুরীপ্রার্থী হিসাবে আবেদন করেন। মামলার বাদী সজীব বলেন, পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে তিনি এস.আই ট্রাষ্টের অফিসে আসেন। এ সময় মো. হযরত বেলাল ওরফে শরিফ নিজেকে প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক হিসেবে পরিচয় দিয়ে তাকে একটি ভিজিটিং কার্ড দেয়। পরবর্তীতে  সজীব ওই প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে আবেদন করেন।

আবেদন করার সপ্তাহখানেক পর গেল ৫ জুলাই তাকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়। ওই দিন তাকে একটি সাময়িক নিয়োগ পত্র প্রদান করা হয় এবং বলা হয় চূড়ান্ত নিয়োগের জন্য তাকে ১৫ হাজার টাকা জামানত হিসেবে প্রতিষ্ঠানের ফান্ডে জমা করতে হবে। পরবর্তীতে সজীব প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালকের নামীয় হিসাব নম্বরে ১৫ হাজার টাকা জমা দেন। 

খোলা কাগজে প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি

এরপর প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থকে তার অনুকুলে চূড়ান্ত নিয়োগপত্র প্রদান করা হয়। ওই প্রতিষ্ঠানের ভূয়া মহাপরিচালক  হযরত বেলাল ওরফে শরিফ এভাবে শাখা ব্যবস্থাপক, ফিল্ড অফিসার ও অফিস সহকারি হিসেবে ৩০/৩৫ জন কে নিয়োগ দিয়ে প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে দেয়।

পরবর্তীতে নিয়োগপ্রাপ্ত বেকার যুবকরা খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন এস. আই ট্রাষ্ট্র নামের প্রতিষ্ঠানের কোন রেজিস্ট্রেশন নেই।

এ অবস্থায় নিয়োগপ্রাপ্ত বেকার যুবকরা  তাদের জামানতের টাকা ফেরত চাইলে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িতরা টালবাহনা শুরু করে। এর এক পর্যায়ে তারা  বলে জামানতের টাকা ফেরত পেতে কিছু দিন সময় লাগবে। এদিকে, ঘটনার দিন গত ৮ আগষ্ট প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরা বেতন ভাতা ও জামানতের টাকা দাবি করলে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বলা হয় ঈদের পরে সব কিছুই পরিশোধ করা হবে।

এ সময় প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালকসহ অন্যান্যদের সঙ্গে নিয়োগপ্রাপ্ত বেকার যুবকদের তুমুল বাকবিতন্ডার ঘটনা ঘটে। আর এর এক পর্যায়ে তানভীর মন্ডল ওরফে মিশন কাগজ ফটোকপি করার কথা বলে প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় থেকে সটকে পড়ে। পরবর্তীতে বেকার যুবকরা সৈয়দপুর থানায় খবর দেয়। খবর পেয়ে সৈয়দপুর থানা পুলিশ মো. হযরত বেলাল ওরফে শরিফকে (২৫) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা নিয়ে আসেন।

পরে ওই দুইজনকে আসামী করে সৈয়দপুর থানায় একটি প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়।

সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহজাহান পাশা একটি ভুয়া এনজিওর মহাপরিচালকসহ দুইজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেন। 

জেএম/রাতদিন