পাটগ্রামে ডাক্তারের সাথে থেকে নিজেই ডাক্তার, ভুল চিকিৎসায় অন্ধ হতে বসেছেন বৃদ্ধ

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় পল্লী চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় চোঁখ হারাতে বসেছেন এক বৃদ্ধ। উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের বাউরা বাজারের ষাটোর্ধ ওই দিনমজুর বৃদ্ধের নাম সামসুল হক।

সামসুলের চোখের চিকিৎসা যিনি করেছেন তার নাম রিয়াজুল করিম দাদুল। তার পরামর্শ পত্রে নিজেকে জেনারেল প্রাকটিশনার ও চক্ষু চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। তবে চক্ষু বিষয়ে কোনো সনদ পত্রই নেই ওই পল্লী চিকিৎসকের।

সঠিক চিকিৎসা না হওয়ার কারণে সামসুল হক নামে ওই বৃদ্ধের চোঁখ নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চক্ষু চিকিৎসক।

সামসুল হক উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের জমগ্রাম এলাকার আব্দুল করিমের ছেলে। তিনি পেশায় দিনমজুর। 

সামসুল জানান, ‘প্রায় এক মাস আগে বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় আমার ডান চোঁখে কোনো কিছু একটা পড়ে। চোঁখের সমস্যা দেখা দিলে বাউরা বাজারের পল্লী চিকিৎসক ডাঃ রিয়াজুল করিম (দাদুল)’র চিকিৎসা গ্রহণ করি। দু’ দফা ঔষধ পরিবর্তন করে দেয় ডাঃ দাদুল। আমাকে বলা হয় আমার চোখের মাংস বেড়ে গেছে। কিন্তু ওই চিকিৎসকের চিকিৎসায় আমার চোঁখের সমস্যা বেড়ে যায় ও কিছুদিন পর থেকে ওই চোখ দিয়ে কিছুই দেখতে পাইনা।

এ অবস্থায়  তিনি লালমনিরহাটের আরডিআরএস’র চক্ষু চিকিৎসক শ্যামল চন্দ্র’র স্বরনাপন্ন হন বলে জানান। চোঁখ পরীক্ষার পর ডাক্তার জানান ভুল চিকিৎসায় তার চোঁখ নষ্ট হয়ে যাওয়ার পথে। তাকে উন্নত চিকিৎসার পরার্মশ দেন ওই চক্ষু চিকিৎসক।

সরেজমিনে দেখা যায়, একটি টিনের চালায় চেম্বার দিয়ে বসেছেন পল্লী চিকিৎসক  রিয়াজুল করিম দাদুল। নিজের কোনো সনদ পত্র না থাকলেও তার পরামর্শ পত্রে নিজেকে জেনারেল প্রাকটিশনার ও চক্ষু চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন চক্ষু চিকিৎসক দাবীদার দাদুল। যা দেখে অনেকেই তাকে চক্ষু চিকিৎসক ভেবে তার কাছ থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ওই এলাকায় তিনি চোঁখের ডাক্তার বলে পরিচিত।

এ বিষয়ে পল্লী চিকিৎসক  রিয়াজুল করিম দাদুল জানান,‘ তার এক বড় ভাই বাংলাদেশ রেলওয়ের চক্ষু চিকিৎসক ছিলেন। তার সাথে চলাফেলা করে তিনি চক্ষু চিকিৎসার উপর একটু ধারণা নিয়েছেন। সেই ধারণা থেকেই তিনি চিকিৎসা দিচ্ছেন। সামসুল হকের চোঁখের চিকিৎসা নিয়ে তিনি বলেন, এটা আমার ভুল হয়েছে। তাঁর উন্নত চিকিৎসার জন্য আমি সব রকম ব্যবস্থাসহ আর্থিক সহায়তা দিয়েছি।

চক্ষু চিকিৎসক ডাঃ শ্যামল চন্দ্র বলেন, সামসুল হক নামে এক ব্যক্তি আমার কাছে চোঁখের সমস্যা নিয়ে এসেছিলেন। তার ভুল চিকিৎসার কারণে চোঁখ নষ্ট হয়ে যাওয়ার পথে। উন্নত চিকিৎসা গ্রহনের জন্য তাকে আমি রংপুর যেতে বলেছি।

এ বিষয়ে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ অরুপ পাল বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জেএম/রাতদিন