রাজীবপুরের সমবায় কর্মকর্তা ৬ বছরেও অফিসে আসেননি!

দীর্ঘ ছয় বছর ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত তিনি। যোগদানের পর একদিনেরও জন্যও তার কর্মস্থলে আসেননি। ঢাকায় বসে মোবাইল ফোনে অফিসের কার্যক্রম পরিচালনা করেন। অফিস সহকারী প্রতিমাসের সরকারি বেতনভাতা তুলে ওই কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়ে দেন। অফিসের কাগজপত্র ও বেতনভাতায় কর্মকর্তার স্বাক্ষরের প্রয়োজন হলে তা কুরিয়ারের মাধ্যমে আদান-প্রদান করা হয়।

কর্মস্থলে রেকর্ড পরিমাণ অনুপস্থিত এই কর্মকর্তার নাম জেসমিন আখতার। তিনি কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা। ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে জেলা সমবায় অফিসে যোগদান করেই তিনি ঢাকায় ফিরে যান। একদিনেরও জন্যও তার কর্মস্থল রাজীবপুরে আসেননি তিনি। ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে অধিদপ্তরের ওপরের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে দিনের পর দিন জেসমিন আখতার কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

রাজীবপুর উপজেলা সমবায় অফিসের অফিস সহায়ক (এমএলএসএস) রেজাউল করিম বলেন, ‘আমাদের ম্যাডাম ঢাকায় থাকেন। তিনি অফিসে আসেন না। কর্মরত অফিস সহকারী ও সহকারী পরিদর্শক দুজন মাসে একবার করে অফিসে আসেন। খালি আমি অফিসের দরজা খুলি আর বন্ধ করি’।

জানা গেছে, অফিসের কর্মকর্তা অনুপস্থিত থাকার কারণে কার্যালয়ের অফিস সহকারী ও সহকারী পরিদর্শক পদে কর্মরতরাও তাদের স্যারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকেন। তবে এ দুজন মাসে একবার করে অফিসে আসেন বেতনভাতা নেওয়ার জন্য। কার্যালয়ের অফিস সহায়ক রেজাউল করিম সকাল ১০টার দিকে অফিসের জানালা খুলে দরজায় তালা লাগিয়ে চলে যান। আবার বিকালে তা বন্ধ করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নবীরুল ইসলাম জানান, তিনি যোগদানের চার মাসের মধ্যে একদিনও সমবায় কর্মকর্তাকে দেখতে পাননি। উপজেলা মাসিক সভায়ও তিনি অনুপস্থিত থাকেন। এ বিষয়ে জেলা সমবায় অধিদপ্তরে চিঠি দেয়া হয়েছে।

রাজীবপুর উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা জেসমিন আখতার মোবাইলে বলেন, ‘আমি রাজীবপুরের কর্মকর্তা ঠিকই কিন্তু ডেপুটিশনে (প্রেষণে) ঢাকায় আছি। তা ছাড়া আমি তো সব সময় খোঁজখবর নিয়ে অফিসের কার্যক্রম পরিচালনা করছি’।

তবে খোঁজ নিয়ে তার ‘প্রেষণে’ থাকা বিষয়টির  সত্যতা মেলেনি।

কুড়িগ্রাম জেলা সমবায় কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘নতুন এসেছি তাই বিষয়টি আমার জানা নেই। দীর্ঘ ছয় বছর ধরে অফিসে অনুপস্থিত রয়েছেন এমনটি হতে পারে না। আমি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো’। তথ্যসূত্র: কালের কন্ঠ অনলাইন

এবি/রাতদিন