বাংলাদেশ ও ভারতে ব্যাপক জনপ্রিয় বাংলা সিনেমা ‘হঠাৎ বৃষ্টি’র পরিচালক বাসু চ্যাটার্জি মারা গেছেন। সুক্ষ রসবোধসম্পন্ এই গুণী পরিচালক বৃষ্টিতে ভিজেই না ফেরার দেশে চলে গেলেন। শেষকৃত্যও হলো বৃষ্টিতে।
বৃহস্পতিবার, ৪ জুন সকাল সাড়ে আটটায় মুম্বাইয়ের বাড়িতে মারা যান তিনি। প্রায় বছরখানেক অসুখে ভোগার পর ৯৩ বছর বয়সে মারা গেলেন এই কিংবদন্তি পরিচালক।
বাসু চ্যাটার্জি পরিচালিত বাংলাদেশ ভারত যৌথ প্রযোজনার ছবি ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ দিয়ে বাংলাদেশে ব্যাপক পরিচিতি পান এই পরিচালক।
বাসু চ্যাটার্জির মরদেহের শেষকৃত্য আনুষ্ঠানিকতা হয়েছে মুম্বাইয়ের সান্তা ক্রুজের শ্মশানে।
তার অসুস্থতা সম্পর্কে ফেরদৌস বলেন, ‘বাসু দা এক বছর ধরেই অসুস্থ। কাউকে চিনতে পারতেন না, কথাও বলতে পারতেন না। ইশরায় কথা বলতেন। বড় মেয়ের চিকিৎসক স্বামীর তত্ত্বাবধানে বাসায় বরেণ্য এই পরিচালকের চিকিৎসাসেবা চলত। করোনার ঠিক আগে তাঁকে শেষ হাসপাতালে আনা হয়।’
বাসু চ্যাটার্জি ৩৫টির মতো হিন্দি ছবি পরিচালনা করেছেন। বাংলা ভাষার ছবি বানিয়েছেন ৫টি, যার মধ্যে ৪টিতে অভিনয় করেছেন ফেরদৌস আর ১টিতে ভারতের প্রসেনজিৎ।
ষাটের দশকের শেষ দিকে বলিউডে ‘সারা আকাশ’ ছবিটি পরিচালনা দিয়ে বাসু চ্যাটার্জির পরিচালক অধ্যায় শুরু। বলিউডে দাপটের সঙ্গে ছবি পরিচালনা করেছেন যে কজন বাঙালি পরিচালক তাঁর মধ্যে অন্যতম বাসু চ্যাটার্জি।
হিন্দির পাশাপাশি বাংলা ভাষার ছবির পরিচালনার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি। বাংলা ভাষায় তৈরি তাঁর ছবিগুলো হচ্ছে ‘হঠাৎ বৃষ্টি’, ‘চুপিচুপি’, ‘টক ঝাল মিষ্টি’, ‘হঠাৎ সেদিন’। ‘সারা আকাশ’, ‘পিয়া কে ঘর’, ‘খাট্টা মিঠা’, ‘চক্রব্যূহ’, ‘বাতো বাতো মে’, ‘চামেলি কি শাদি’, ‘এক রুকা হুয়া ফয়সলা’, ‘জিনা ইহা’, ‘আপনে পেয়ারে’ ও ‘রজনীগন্ধা’র মতো বিখ্যাত সব চলচ্চিত্র তৈরি করেছেন তিনি।
বাসু চ্যাটার্জির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘কিংবদন্তি পরিচালক, তথা চিত্রনাট্যকার বাসু চ্যাটার্জির মৃত্যুতে আমি শোকাহত। তিনি আমাদের “ছোটি সি বাত”, “চিৎচোর”, “রজনীগন্ধা”, “ব্যোমকেশ বক্সী”, “রজনী”র মতো ছবি উপহার দিয়েছেন।
পরিচালক মধুর ভন্ডারকর টুইটারে লেখেন, ‘প্রবাদপ্রতিম পরিচালকের মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত। তাঁর সূক্ষ্ম রসবোধ এবং সহজ করে ছবির গল্প বলার ক্ষমতা সারা জীবন মনে থেকে যাবে।’