লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় জুয়ার টাকা না পেয়ে এক গৃহবধূকে মারধর করেছে তার স্বামী। আলেমা বেগম নামের ওই নারীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় তার স্বামী আবুল কাশেম ও শাশুড়ি সাহেদা বেগমের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
গত শুক্রবার, ২০ নভেম্বর মধ্যরাতে উপজেলার উত্তর পারুলিয়া এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। আলেমা বেগম উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল খালেকের মেয়ে।
জানা গেছে, ১১ বছর আগে ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের বিনিময়ে আলেমার সাথে বিয়ে হয় আবুল কাশেমের। তাদের দুটি সন্তান রয়েছে। কাশেম নিয়মিত জুয়া খেলে। যৌতুক হিসেবে পাওয়া ৫০ হাজার টাকাও জুয়া খেলে শেষ করে। সম্প্রতি বাবার বাড়ি থেকে আরও ৫০ হাজার টাকা নিয়ে আসতে স্ত্রীকে চাপ সৃষ্টি করে তার স্বামী। বিষয়টি জানতে পেরে আলেমার বাবা মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে আরও ৪০ হাজার টাকা যোগাড় করে দেন জামাইকে। কিন্ত কাশেম সেই টাকাও জুয়া খেলে শেষ করে। সর্বশেষ আরও ১০ হাজার টাকার জন্য স্ত্রীকে চাপ দিতে থাকে।
এই অবস্থায় গত শুক্রবার রাতে জুয়ায় হেরে বাড়ি ফিরে আলেমাকে ১০ হাজার টাকার জন্য আবারও চাপ দেয়। এতে সে অপারগতা জানালে মারধর শুরু করে তার স্বামী। বেধড়ক পিটুনিতে আলেমা অচেতন হয়ে পড়লে ঘরে আটকে রাখা হয়। শনিবার স্থানীয়রা বিষযটি জানতে পেরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আলেমার বাবা-মা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। ।
এ বিষয়ে কথা বলতে কাশেমের ব্যবহৃত নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
হাতীবান্ধা থানার ওসি এরশাদুল আলম বলেন, অভিযোগের তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মার খেলেন সেলিনাও : হাতীবান্ধার টংভাঙ্গা ইউনিয়নে স্বামীর চাহিদা মতো টাকা দিতে না পারায় সেলিনা বেগম (২৬) নামে আরেক নারী স্বামীর বেধড়ক পিটুনির শিকার হয়েছেন। তাকেও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি ওই ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল কুদ্দুস শাওনের স্ত্রী।
গত শুক্রবার, ২০ নভেম্বর দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। শাওন ওই এলাকার দবিয়ার রহমানের ছেলে। তার স্ত্রী উপজেলার পশ্চিম বেজগ্রাম এলাকার নুর ইসলামের মেয়ে।
জানা গেছে, এক লাখ টাকা যৌতুকের বিনিময়ে সেলিনা বেগমের বিয়ে হয় শাওনের সাথে। প্রায় আট বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। শাওন কিছুদিন থেকে আবারো শশুর বাড়ি থেকে এক লাখ টাকা নিয়ে আসতে চাপ দিতে থাকেন স্ত্রীকে। কিন্ত টাকা আনতে না চাওয়ায় স্ত্রীর ওপর শুরু হয় স্বামীর নির্যাতন। এরই ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার সেলিনাকে বেধড়ক মারধর করে স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজন। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছেন বলে জানান হাতীবান্ধা থানার ওসি) এরশাদুল আলম বলেন, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এইচএ/রাতদিন