লালমনিরহাটের পাটগ্রামে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বেশি দামে সার বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এ ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিক মূল্য উপেক্ষা করা হচ্ছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা।
উপজেলার বিভিন্ন হাট- বাজার ঘুরেও অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। দেখা গেছে, সংকটের কথা বলে প্রকাশ্যে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে সার। ফলে রবি মৌসুমের শুরুতেই বেকায়দায় পড়েছে কৃষক।
তারা বলছেন, অতি মুনাফা লোভী সার বিক্রি সিন্ডিকেট বাজারে সারের কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দরে সার বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের কৃষক একরামুল হক ও জগতবেড় ইউনিয়নের কৃষক সহিদার রহমান বলেন,‘ রবিশষ্যে বিশেষ করে বোরো ধান, ভুট্টা ও শীতকালীন ফসল ফলাতে প্রয়োজনীয় টিএসপি সার দিতে হয়। এখন বাজারে টিএসপি সার প্রতি বস্তায় (৫০ কেজি) ৩ থেকে ৪ শত টাকা বেশি দরে কিনতে হচ্ছে। বেশি টাকা না দিলে সার পাওয়া যায় না।,
জগতবেড় ইউনিয়নের কৃষক মিলন হোসেন জানান,‘ পাটগ্রাম পৌর শহরের একটি দোকান থেকে টিএসপি ও ডিএপি সার ক্রয় কিনতে বাধ্য হয়েছি সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে টাকায়। অথচ সরকার নির্ধারিত দর লিখে রশিদ দেয়া হয়েছে’।
একাধিক কৃষক অভিযোগ করেছেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সারের বাজার দর মাঝে মাঝে মনিটরিং করছে। কিন্তু সারের দাম বেশি নেওয়ার বিষয়ে পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এজন্য ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
জোংড়া ইউনিয়নের সরকারেরহাট বাজারের মেসার্স আয়শা ট্রেডার্সের খুচরা সার ব্যবসায়ী আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘ডিএপি সারের সরকারি বেঁধে দেওয়া দর (প্রতি বস্তা ৫০ কেজি) ৮00 টাকা ও টিএসপি ১১00 টাকা। বেশি দামে কেনায় আমরা ডিএপি সার সাড়ে ৯০০ টাকা এবং টিএসপি সার ১৪৭০ টাকা বিক্রি করছি’।
অভিযোগ রয়েছে, উপজেলার মেসার্স অগ্রণী ট্রেডার্স, মৌসুমী ট্রেডার্স, বাঁধন ট্রেডার্স, কালীপদ ট্রেডার্স ও রিদি ট্রেডার্সের মালিকরা চড়া দামে সার বিক্রি করছেন। এছাড়াও বুড়িমারী, দহগ্রাম, জগতবেড়, কাউয়ামারী, আউলিয়ারহাট, ললিতারহাট এলাকার হাট- বাজারগুলোতেও একই চিত্র।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল গাফ্ফার দাবি করেন, ‘উপজেলায় সারের কোনো সংকট নেই। আমরা নিয়মিত বাজার দর মনিটরিং করছি। সারের দাম বেশি নেওয়ার প্রমাণ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।
এ বিষয়ে জানতে পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুন নাহারের সাথে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, ‘আমরা যাচাই করে দেখব। কেউ সারের দাম সরকারি নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশি নিলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।
এইচএ/রাতদিন