পরশ মনি। পড়াশুনা করছে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সরকারি জসমুদ্দিন কাজী আব্দুল গণি কলেজে। শীত-বৃষ্টি উপেক্ষা করে প্রায় ১৬ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে প্রতিদিন কলেজে আসেন। বাড়ী থেকে বেড়িয়ে অনেকটা পথ পায়ে হেঁটে আসতে হয় বাইক স্ট্যান্ডে। এরপর ইজিবাইকে কলেজ। দরিদ্র বাবার পক্ষে মেয়েকে একটি বাইসাইকেল কিনে দেওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে পরশ মনি এখন থেকে বাইসাইকেলে চেপে কলেজে আসবেন। সোনালী ব্যাংক তাকে নতুন একটি ঝাঁ চকচকে বাইসাইকেল দিয়েছে। ব্যাংকটির কর্পোরেট সোস্যাল রেসপন্সিবিলিটির (সিএসআর) আওতায় পরশ মনির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে একটি চকচকে নতুন বাইসাইকেল। শুধু পরশ মনি নন, তার মতো শ খানেক নারী শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে বাইসাইকেল তুলে দেওয়া হয়েছে। একই সাথে শিক্ষার্থীদের মাঝে কম্বলও বিতরণ করা হয়েছে।
শনিবার, ৪ জানুয়ারী দুপুরে পাটগ্রাম সরকারি জসমুদ্দিন কাজী আব্দুল গণি কলেজচত্বরসহ উপজেলার তিনটি স্থানে শতাধিক গরীব ও মেধাবী ছাত্রীদের এসব সামগ্রী দেয়া হয়।
এদিন সরকারী জকাআগ কলেজ চত্বরে এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সোনালী ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আতাউর রহমান প্রধান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান।
এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রুহুল আমীন বাবুল, ভারপ্রাপ্ত ইউএনও দীপক কুমার দেব শর্মা, সোনালী ব্যাংকের রংপুর বিভাগীয় জেনারেল ম্যানেজার মো. আলী মর্তুজা, এজিএম আব্দুল বারেক চৌধুরী ও সৈয়দ তৌহিদুল হক।
উপজেলার জগতবেড় ইউনিয়নের ভেরভেড়িরহাট গ্রামের কলেজ শিক্ষার্থী উম্মে হালিমা বাইসাইকেল পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলছিলেন, ‘আমার বাবা ক্ষুদ্র কৃষক। আমার একটি সাইকেলের খুব প্রয়োজন ছিল। তিনি সেটা কিনে দিতে পারছিলেন না। সেই প্রয়োজন আজ মিটে যাওয়ায় এখন নিয়মিত কলেজে আসতে পারবো’।
সোনালী ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আতাউর রহমান প্রধান বলেন, ‘অপেক্ষাকৃত দূরে বাড়ি, মেধাবী ও গরীব এই তিন দিক বিবেচনা করে বাইসাইকেলের জন্য শিক্ষার্থী নির্বাচিত করা হয়েছে। ভবিষ্যতেও নারী শিক্ষা এগিয়ে নিতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে’।
জেএম/রাতদিন